হনুমান শনিদেবকে কিভাবে শিক্ষা দিয়েছিল ? হনুমান ও শনিদেবের লড়াইয়ের কাহিনী ?

হনুমান শনিদেবকে কিভাবে শিক্ষা দিয়েছিল ? হনুমান ও শনিদেবের লড়াইয়ের কাহিনী ? 

যদি কোন মানুষের শনির দশা লেগে থাকে এবং সময় খারাপ যায় তাহলে সেই মানুষকে জ্ঞানীগুণীরা বলেন হনুমানজির সাধনা করতে হনুমানজির আরাধনা করতে হনুমানজি পারে তাকে এই সমস্ত পরিস্থিতি থেকে উদ্ধার করতে, কিন্তু এমনটা কেন যে শনিদেবের পকেট থেকে বাঁচার জন্য আপনাকে হনুমানজির পূজা-অর্চনা করতে হবে | আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আমরা জানব হনুমানজি এবং শনিদেবের যুদ্ধের কথা যেখানে হনুমানজি শনিদেব কে পরাজিত করে তাকে উচিত শিক্ষা দিয়েছিল |

হনুমান শনিদেবকে কিভাবে শিক্ষা দিয়েছিল
হনুমান শনিদেবকে কিভাবে শিক্ষা দিয়েছিল

সূর্যপুত্র শনিদেব ন্যায়ের দেবতা যদি কোন ব্যক্তি অনৈতিক কর্মকারে শনিদেব তখন তাকে শাস্তি দেন সেই সমস্ত মানুষদের দন্ড দেওয়ার সাথে সাথে তাদেরকে মানসিক দিক থেকেও বিপর্যস্ত করে দেন, পৌরাণিক কথা অনুসারে রামায়ণ কাল অর্থাৎ ক্রেতা যুগে শনিদেবের নিজের শক্তি ও পরাক্রমিতার ওপর অহংকার জন্মেছিল যার ফলে শনিদেব হনুমানজির বল ও পরাক্রমশালী প্রশংসা শুনে হিংসায় তার সঙ্গে যুদ্ধ করার জন্য বেরিয়ে পড়েন | সেই সময় হনুমানজি, তার প্রভু শ্রী রামঝির ভক্তিতে ঢুকেছিলেন আর সেই সময় শনিদেব হনুমানজির কাছে চলে আসেন এবং হনুমানজিকে যুদ্ধের জন্য আহ্বান জানান হনুমানজি তখনই শনিদেবের অহংকারের কারণ বুঝে গিয়েছিলেন | এর জন্য হনুমানজি শনিদেব কে শান্ত করার জন্য বলেছিলেন এটা এখন যুদ্ধের সময় নয় আপনি ফিরে যান কারণ হনুমানজি কখনোই যাইত না কারো সাথে যুদ্ধে নামতে বা নিজের শক্তির প্রকোপ দেখাতে |

হনুমান শনিদেবকে কিভাবে শিক্ষা দিয়েছিল ? হনুমান ও শনিদেবের লড়াইয়ের কাহিনী ? 

কিন্তু কোন মতেই শনিদেব হনুমানজির কথা মানলেন না তার বদলে হনুমানজিকে যুদ্ধের পরোচিত করতে থাকেন যার ফলে হনুমানজি নিরুপায় হয়ে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হলেন | আর সেই সময় হনুমানজি ও শনিদেবের মধ্যে ভয়ংকর যুদ্ধ আরম্ভ হলো | স্বয়ং মহাদেবের অবতার এবং রামভক্ত হনুমানের সামনে এইবা টিকতে পারবে, সেই যুদ্ধে ফলাফল তাই হয়েছিল যেটা নিশ্চিত ছিল শনিদেব কে হনুমানজি পরাস্ত করলেন এবং যুদ্ধের পর হনুমানজিকে যদিও শনিদেব নিজের শত্রু ভেবে নিয়েছিলেন এবং যুদ্ধের জন্য আহান জানিয়েছিলেন কিন্তু হনুমানজি তাকে কারন শত্রু বলে মনে করাটা ঠিক নয় বলে এ যন্ত্রণা সহ্য না করতে পেরে হনুমানজি কৃপা করে তার সেই যন্ত্রনা নিরাময় করার জন্য তার শরীরে সরষের তেল দিয়ে মালিশ করে দিয়েছিল এবং তাতে শনিদেবের ক্ষত পূরণ হয়ে গিয়েছিল এবং তিনি আরাম পেয়েছিলেন | আর তাই থেকেই শুরু হয় শনিদেবের উপর সর্ষের তেল দেওয়া শনিবার হলে আপনারা দেখতে পারবেন যেকোনো মন্দিরে গেলে পারে শনিদেবের মাথায় শরীরে সরষের তেল দেয়া হচ্ছে এবং আরাধনা চলছে। 

হনুমান শনিদেবকে কিভাবে শিক্ষা দিয়েছিল ? হনুমান ও শনিদেবের লড়াইয়ের কাহিনী ? 

আরো একটা কথা প্রচলন আছে যে হনুমানজির সাথে শনিদেব যুদ্ধ করতে এসেছিল ঠিকই কিন্তু হনুমানজি তার দ্রুত বুদ্ধির দ্বারা হারিয়েছিলেন | এমনটা হয়েছিল যে কলিযুগ আরম্ভ হওয়ার পরে কোন দেবী দেবতা পৃথিবীতে আর থাকতে পারবেন না কিন্তু হনুমানজি সেই সময় প্রভু শ্রী রামঝির নাম জপ করেছিলেন এবং সেই সময়ই শনিদেব কর্কট ভাষায় হনুমানজিকে পৃথিবী ত্যাগ করতে বললেন যে কলিযুগে কোন দেবী দেবতারা এই পৃথিবীতে থাকতে পারবে না কারণ যেই পৃথিবী থাকবে তার ওপর আমার সাড়ে সাথের সাথে প্রভাব পড়বে এজন্য এই দশা আপনার ওপরেও পড়তে পারে | শনিদেবের এ কথা শুনে হনুমান জি বললেন মানুষ এবং দেবতা শ্রী রামের চরণেই থাকেন তাদের ওপর তো কালের প্রভাব ও পড়ে না শনিদেব এ কথা শুনে হনুমান কে বললেন আমি সৃষ্টিকর্তার বিধির বিধানের অপমান করতে পারবো না | আপনিও এই পৃথিবীতে আছেন তাই আপনিও আমার এই প্রকোপ থেকে বাঁচতে পারবেন না | আমার এই দশা এখন থেকেই আপনার শরীরে পড়তে থাকবে এ কথা শুনে হনুমান জি বললেন আপনি আসুন আপনি আমার শরীরে কোন অংশে প্রকোপ ফেলবেন একথা শুনে শনিদেব বলল আমি আমার আড়াই বছর মানুষের মাথায় বসে তাদের বুদ্ধিকে বিচলিত করি এবং পরের আড়াই বছর মানুষের পেটে থেকে মানুষদের অসুস্থ বানায় এবং বাকি আড়াই বছর মানুষের পায়ের থেকে মানুষকে ভুল পথে চালনা করি একথা বলে শনিদেব হনুমানজির মাথার উপর বসে পড়লেন | 

 

এতে হনুমানজির মাথায় সুড়সুড়ি হতে লাগলো এর ফলে হনুমানজি একটি বিশাল পর্বত তার মাথার উপর রেখে দিল, এতে শনিদেব সেই পর্বতের নিচে চাপা হতে থাকলো এবং শনিদেব হনুমানজিকে চিৎকার করে বললেন এটি আপনি কি করছেন তখন হনুমান জি বলল যে পোকার আপনি বিধির বিধান মানাই অটল এমন বোকার আমিও আমার স্বভাবের অটল কারণ আমি আমার মাথায় সুড়সুড়ি হলে এমনটাই করি এ কথা বলে হনুমানজি আরও একটি বড় পর্বত তার মাথার ওপর তুলে রাখলেন এর ফলে শনিদেব আরো বেশি যন্ত্রণায় ছটফট করতে লাগলেন | এর ফলে শনিদেব হনুমানজিকে বললেন আপনি এই পর্বত গুলিকে দয়া করে আমার উপর থেকে সরান আপনি যাই বলবেন আমি তাই করব তবুও হনুমানজি শনিদেবের কথা শুনলেন না এবং আরো একটি পর্বত তার মাথার ওপর রেখে দিলেন তখন শনিদেব অতি যন্ত্রণায় বললেন আমি আপনার কোন দিনই সম্মুখে আসবো না আপনি দয়া করে এই পর্বত গুলি আমার ওপর থেকে সরান তবুও হনুমানজি এখানেই থামলেন না চতুর্থতম পর্বতার মাথার উপরে রাখলেন, তখন শনিদেব যন্ত্রণায় থাকতে না পেরে হনুমানজিকে বলেন হে প্রভু আমি কোনদিনই আপনার এবং আপনাকে স্মরণ করা মানুষদের কাছে যাব না। দয়া করে আমাকে এই যন্ত্রনা থেকে মুক্তি দিন। এজন্যই কথিত আছে, যখনই আপনার শনির দশা চলবে তখনই আপনি হনুমানজীর সাধনা করুন হনুমানজীর আলোচনা করুন তিনি এমন একটি দেবতা যে এখন অব্দি বিরাজমান রয়েছে এই পৃথিবীতে | আপনার সমস্ত সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে সংসারে সুখ শান্তি বৃদ্ধি পাবে ও আপনিও সুন্দর ভাবে জীবন যাপন করতে পারবেন | 

 

এই শনিদেবের প্রভাবে মহাদেব কেও কিন্তু পৃথিবীতে পদার্পণ করতে হয়েছিল। এই শনিদেবের জন্যই শ্রীরামচন্দ্র ১৪ বছর বনবাসে কাটাতে হয়েছিল | আজও পর্যন্ত শনিদেবের পক্ষ থেকে কেউ বাঁচতে পারেনি আপনি যদি শনিদেবের প্রকোপ থেকে বাঁচতে চান অবশ্যই কিন্তু হনুমানজির সাধনা করবেন। একমাত্র আপনাকে এই খারাপ সময় থেকে ভালো সময় ফিরিয়ে আনতে হনুমানজি সাধনা করতে পারবে জীবনে অনেক খারাপ ভালো সময় আসে তার মধ্যে আপনি ঈশ্বরকে অবশ্যই বিশ্বাস করে নিজের কর্মফল দ্বারা নিজের সময়কে ভালো করে নিতে পারেন। | আর আপনি যদি একজন হিন্দু হয়ে থাকেন এবং আমাদের এই ওয়েবসাইটে ভিজিট করে থাকেন তাহলে প্রতিদিন আমাদের দেওয়া প্রবন্ধ গুলি আর্টিকেলগুলি আপনি অবশ্যই ভালো করে পড়ুন তবে আমাদের হিন্দু ধর্মের মহত্ত্ব তা সম্পর্কে সঠিকভাবে জানতে পারবেন এবং আপনারা অবশ্যই যে আমার আর্টিকেলটি পড়ছেন কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করে যাবেন। 

হনুমানজির চল্লিশা অবশ্যই আপনারা প্রতিদিন সকাল এবং সন্ধ্যে পাঠ করতে পারেন আপনার সময় ভালো হয়ে যাবে |

 

“ শ্রী গুরু চরণপদ্ম সন্ননি মনে মনে কোটি কোটি প্রনামিনো তাহারো চরণে। সিরামের চরণ পদ্ম করিয়া স্মরণ চতুর্ভোগ্য ফল যাবে লোভে অনেকক্ষণ ,বুদ্ধিহীন জনে ওহে পবন কুমার গোছাও মনের যত ক্লেশও অধিকার ,মহাবীর বজরঙ্গি তুমি হনুমান সুমতি নাসিয়া করো কুমতি প্রধান, পঞ্চান্ন বড় না তবুও তুমি এ সুরেশ করেননিতে কোন দল কাঁধে কুঞ্চিত কেশ, সিরামের দুধ তুমি অতিলিতে বলতাম অঞ্চনার পুত্র পবনশুদের নাম মহাবীর বজরঙ্গি তুমি হনুমান কুমুতি নাশিয়া সুমতি প্রধান যেই জন শতবার ইহা পাঠ করে সকালে অশান্তি তার চলে যায় দূরে “ জয় জয় হনুমান গোসাই তবু কৃপায় ভিন্ন আর কোন গতি নাই যেই জন সত্য বাড়িয়া পাঠ করে সকালে অশান্তিতার চলে যায় দূরে ভূত-পেত পিচাস কাছে আসিতে না পারে মহাবীর তব নাম যে জন সরে “ 

Prokash Durlov

আমার নাম প্রকাশ করলাম আমি একজন প্রফেশনাল ব্লগার | ব্লগিং করি এবং ব্লগিং থেকে যেটুকু অর্থ উপার্জন করি সেটুকু আমার সংসারের কাজকর | আমি ২০১৩ সাল থেকে ব্লগিং করছি ব্লগিং ক্যারিয়ারে অনেক ওঠানামা হয়েছে তবুও আমি ব্লক থেকে ছাড়িনি আজও পর্যন্ত ইন্টারনেটের মাধ্যমে সমস্ত ধরনের ইনফরমেশন দর্শকের সামনে তুলে ধরছি |

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন

GP Global