কেন শ্রীরাম হনুমানের ওপর ব্রহ্মাস্ত চালালেন ?
একবার এমন এক সময় এসেছিল ভক্ত এবং ভগবানের মধ্যে যুদ্ধ হয়েছিল অর্থাৎ আমাদের সকলের প্রিয় রাম ও তার ভক্ত হনুমানজির সঙ্গে যুদ্ধ হয়েছিল এর কারণটা কি ছিল জানলে হয়তো আপনারা অবাক হয়ে যাবেন। কেনইবা এই যুদ্ধ হয়েছিল এই যুদ্ধের পরিনাম টাই বাকি ছিল জানবো আজকের এই আর্টিকেল থেকে |
হনুমান এবং শ্রীরামের মধ্যে যুদ্ধ মানেই শংকর অবতার ও বিষ্ণু অবতারের মধ্যে যুদ্ধ | যখনই শ্রীরামের নামটি নেওয়া হয় তখনই হনুমানের নামটা আসা স্বাভাব রাম এবং হনুমানের যে মিত্রতা যে কতটুকু ছিল তা আমরা রামায়ণ পড়ে অনেকেই জানতে পেরেছি অসুর বধ অসুর সাম্রাজ্যের নিধান সেইসঙ্গে রাম সেতু নির্মাণ ও শেষে সীতাকে উদ্ধার প্রতিটি কাজে হনুমানজির যে নিখুঁত ভক্তের পরিচয় দিয়েছিল রামায়ণ থেকে আমরা তাদের সম্পর্কটা জানতে পেরেছিলাম তবে রামায়নের শেষে যখন শ্রীরামচন্দ্র অযোধ্যায় রাজত্ব করছিলেন সেই সময় ঋষি দুরবাসার সাথে এক রাজার কলহবাদে এবং দুর্বাসাকে ওই রাজা বিভিন্ন কৌতূহলে অপমান করেন |
ঋষি দুরবাসা কে ছিলেন ?
যুগ যুগ ধরে জন্মগ্রহণ করেছেন অনেক ঋষি মনিরা তাদের জন্মগ্রহণ হয়েছে বিভিন্ন উদ্দেশ্যে এই সমস্ত ঋষি মনিরা সাধনার দ্বারা বিভিন্ন ধরনের দৈব্য ক্ষমতার অধিকারী হয়েছিলেন কেউ কেউ সেই দৈব্য ক্ষমতাকে ভালো কাজে লাগিয়েছিলেন আবার কেউ খারাপ কাজের জন্যও ব্যবহার করেছিলেন |
এদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন ঋষি দুর্বাসা যাকে দেখে ভগবানেরাও ভয় পেতেন এই ঋষি দুর্বাসার জন্যই সমুদ্র মন্থন করতে হয়েছিল এমনকি শ্রীকৃষ্ণের যদু বংশের নাশ হয়েছিল এই ঋষির জন্য | কে ছিল এই মুনি ঋষি কেনই বা দেবতারা তাকে এত ভয় পেত আজ সমস্ত কিছু জানব আজকের এই প্রবন্ধটির থেকে |
ঋষি দুর্বাসা এমন একজন মনীষী ছিল যে দীর্ঘদিন তপস্যার ফলে মহাদেব কে সন্তুষ্ট করে অভিশাপের বর অর্জন করেছিলেন এর ফলে তার মুখ দিয়ে বলা বাক্য কাজে লেগে যেত অর্থাৎ বাকসিদ্ধ মহারাজ ছিলেন তিনি তাই দেবতারা এমনকি রাজা মহারাজারা তাকে ভয় পেত | তবে এই মনিষী যখন তার আশ্রমে বিশ্রাম করেছিল তখন তার আশ্রমের কাছে থাকা একটি হরিণকে স্বীকার করেন এক রাজা সেই রাজা ছিল ভীষণ পারদর্শী এবং কখনো কাউকে সম্মান দেওয়াটা তার স্মরণে ছিলনা | তাই তিনি এই ঋষি দুরবাসা কেউ না জেনে অনেক খারাপ কথা বলে দেয় আর এই ঋষি যখন এই সমস্ত কথা গিয়ে রামকে জানায় তখন রাম ক্ষুব্ধ হয়ে ওই রাজার সাথে যুদ্ধের আহান জানান এবং সে রাজা ছিল চরম হনুমান ভক্ত তাই তিনি হনুমানজির কাছে যান এবং বলেন হে প্রভু আমার রাজ্যে চরম সংকট আসতে চলেছে আপনি আমাকে বলুন এই সংকট থেকে রক্ষা করবেন হনুমানজি দেখল তার কাছে তার ভক্ত এসেছে তাকে কি করে নিরাশা করা যায় কিছু না বুঝেই হনুমান চিতাকে রক্ষা করার জন্য কথা দিলেন এবংপরে জানলেন তার বিরুদ্ধে রাজা রাম যুদ্ধ করতে আসছে অর্থাৎ তার নিজের প্রভু, যদিও হনুমান নিজের দেওয়া বচন থেকে কখনো পিছিয়ে পড়ে না যাকে তিনি একবার কথা দেবে তা পালন করেই ছাড়বেতবে তার মনে কষ্ট হতে লাগলো যে আজকে আমার প্রভুর সাথে আমার লড়তে হবে |
কেন শ্রীরাম হনুমানের ওপর ব্রহ্মাস্ত চালালেন ?
আসলে এটা বহুদিন আগেই নির্ধারিত ছিল হনুমানের মা একবার হনুমানকে বলেছিল তুমি একদিন এক মস্ত বড় রাজাকে সাহায্য করবে তাই হনুমানজির সেই কথা মনে পড়ে এই রাজায় হয়তো সেই রাজা যাকে আমি সাহায্য করবো আমার মা আমাকে যাকে সাহায্য করার আদেশ দিয়েছিল রণক্ষেত্রের আম এবং হনুমান দুজনেই পৌঁছে যায় ঋষি দুর্বাসা ও সঙ্গে করে যায় যুদ্ধের ময়দানে | তখন রাম দেখে হনুমান তার বিপক্ষে শত্রুদের সাথে দাঁড়িয়ে রয়েছে দুর্বারসা তখন রামকে বলে তুমি প্রথমে হনুমানকে বান চালাও হনুমানকে তোমার বান নিক্ষেপ কর রামের হাত দুটো কাঁপতে থাকে তবুও ঋষি দুর্বাশার কথাই তিনি একের পর এক বান ছুড়তে থাকে কিন্তু হনুমানজি ছিল ত্রিভুবন জয়ী কোন বান এবং কোন অর্থশাস্থ্য তার ওপর কোন কাজ করবে না তার মুখে একটাই নাম চপ ছিল সেই মুহূর্তে জয় শ্রীরাম রাম নাম নিয়ে তিনি সমস্ত অস্ত্রকে বিফল করে দিচ্ছিল | এরপর রাম যখন নিজে ব্রহ্মাস্ত্র চালায় তখন বোম্বাসতো হনুমানের কাছে গিয়ে রাম নাম শুনে নিষ্ক্রিয় হয়ে যায় তখন ঋষি দুরবাসা দেখেন যে শুধুমাত্র রাম নাম নিয়েই তিনি যুদ্ধে রামের বিরুদ্ধে রামের নিক্ষেপ করা এক একটি অস্ত্রকে নিষ্ক্রিয় করে ফেলছে নিজে কখনো কোনো অস্ত্র প্রয়োগ করছে না রামের বিরুদ্ধে তখন রাম কে কথাটি বলে ঋষি দুরবাসা তখন রাম কে এই যুদ্ধ শেষ করতে বলে এবং হনুমান ওই রাজাকে বলে তুমি গিয়ে দুরবাসার কাছে ক্ষমা চেয়ে নাও |
হনুমানের আদেশে ওই রাজা ঋষি দুরবাসার কাছে ক্ষমা চেয়ে নেন আর এভাবেই রাম ও হনুমানের যুদ্ধ শেষ হয় | একথা শুনে রাম নিজের অস্ত্র ফেলে দিয়ে দৌড়ে হনুমানের কাছে যায়। এবার হনুমানকে জড়িয়ে ধরে বলে। আমার হাতে আজ কি হচ্ছিল জানিনা আমি কি বড় পাপ করে ফেলছিলাম আমি তোমার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে গিয়ে বিশাল বড় ভুল করে ফেলেছি তুমি আমায় ক্ষমা করে দিও হনুমান | তখন হনুমান বলল প্রভু আমরা সকলেই নিজেরা নিজেদের কর্তব্যেপরায়ণ তাই আপনি আপনার কর্তব্য করেছেন এবং আমি আমার কর্তব্য পালন করেছি যথাযথভাবে ওই রাজা আমার কাছে এসে সাহায্যের জন্য বলেছিল এবং আমি তাকে কোন কিছু না শুনেই তাকে কথা দিয়ে ফেলেছি আমি তোমার বিপদে পাশে থাকব তাই তার বিপদ শুনে আমি এই রণক্ষেত্রে পৌঁছে গিয়ে দেখলাম যখন আমার প্রভু আমার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে রয়েছে আমি হতবাক হলাম আমি একই কথা দিয়েছি | এভাবেই রাম এবং হনুমানের মিত্রতা চিরস্থায়ী ভক্ত ও ভগবানের ভালবাসার কথা আমরা জানতে পারি |
তোমরা যদি হিন্দু ধর্মাবলম্বী হয়ে থাকো এবং আমার এই প্রবন্ধটি পড়ছো তবে আমি তোমাদেরকে একটি কথা বলব কখনো কাউকে কোন কথা দেওয়ার আগে অবশ্যই তার বিষয়বস্তু জেনে নিবে তুমি সে কাজটি করতে পারবে কিনা বা তোমার জন্য সেই কাজটি উপযোগী কিনা সে কাজের পর তোমার তো কোনো বিপদ হতে পারে কিনা এগুলি অবশ্যই জেনে নেবে এবং তবেই সেই কাজের দিকে ছুটে যাবে। তো বন্ধুরা আরটিকেলটি যদি তোমরা পড়ছো ভালো লেগে থাকে তবে অবশ্যই আমার কমেন্ট বক্সে তোমাদের নাম লিখে যাবে যাতে আমার বিগত দিনে আর্টিকেলগুলো দিতে একটু উৎসাহিত হয় যে আমার আর্টিকেলগুলো আপনার মত ব্যক্তিরা পড়ছে। আজকের দিনে |
এমন রাম ও হনুমানের সাথে যুক্ত রামায়ণ তথা কলিযুগে কৃষ্ণ অবতারের সম্পূর্ণ কাহিনী আপনার যদি প্রতিদিন আপডেট পেতে চান আমাদের এই ওয়েবসাইটটিকে বুক মার্ক করে রাখুন এই ওয়েবসাইটে আমরা ধর্মমূলক সমস্ত নীতিকথা ও গীতার বাণী সঙ্গে বেশ কিছু পৌরাণিক ইতিহাস তুলে ধরব যা আমাদের দেব দেবীর সঙ্গে জড়িত আপনারা যদি দেবদেবীর গল্পের ইতিহাস জানতে চান তবে অবশ্যই আমাদের এই ওয়েবসাইটে আসবেন ভিজিট করবেন কমেন্ট বক্সে লিখবেন আমি সেই কমেন্ট অনুযায়ী আপনাদের জন্য সেই দেবতার উপর বেশ কিছু প্রবন্ধ তৈরি করব | আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ করবার জন্য আমি আপনাদেরকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি আজকের মত এইটুকুতেই সমাপ্ত হইল |