হনুমান চললেন লঙ্কার উদ্দেশ্যে
হনুমান চল্লেন লঙ্কার উদ্দেশ্যে| রামায়ণ এমন এক মহাকাব্য যেখানে নানা রকমের অবতার ও বহু বীরপুরুষের বিস্তারিত বর্ণনা আমরা পায় রামায়ণ কে পাঁচটি কান্ডের অন্তর্গত নানা ভাবে লেখা রয়েছে যার মধ্যে ৫ নম্বর কান্ডটি হল সুন্দর কান্ড এই সুন্দর কাণ্ড রামায়ণের সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় কারণ এখানে শুধুমাত্র রামচন্দ্রের নয় ভগবান শিবের অন্যতম অবতার মহাবলী হনুমানজীর কথা উল্লেখ করা হয়েছে বাল্মিকি রচিত রামায়ণ অনুযায়ী যখন সী তামাকে খোঁজার জন্য সবদিক গজ বানর ও বনগ্ন যোদ্ধারা অসফল হলেন তখন একমাত্র পবন পুত্র হনুমানজি তাকে খুঁজে বার করতে সক্ষম হয়েছিলেন। হনুমানজি বানর প্রজাতির অন্তর্ভুক্ত ছিল আর উনি ছোটবেলায় খুব চঞ্চল ছিলেন এই কারণেই ওনার নিজের ছোটবেলায় আশেপাশে থাকা সমস্ত ঋষিমণিকে বিরক্ত করতেন দিনের পর দিন দুষ্টুমি ওনার বেড়ে চলত ঠিক এই কারণেই ওনার মা-বাবা খুবই চিন্তিত হয়ে পড়েছিল প্রচন্ড বিরক্ত করতেন। হনুমানজি জানরত সমস্ত মনিটর কে নিজের শক্তির দ্বারা প্রচন্ড বিরক্ত করতেন তিনি যজ্ঞের কার্ডগুলোকে অযথা ফেলে দিতেন জঙ্গলের গাছপালা গুলো কেউ তছনছ করে দিতেন ওই জঙ্গলে অনেক মুনিঋষি ও সাধু সান্তনা বাস করতেন। ওনারা হনুমানের এই বদমাইশিতে খুবই বিরক্ত হয়ে পড়তেন কিন্তু প্রভুর আমকে সহায়তা করার জন্য হনুমানের এমন বলশালী হওয়া প্রয়োজন ছিল হনুমানের এমন আচরণ আচরণ করা খুব একটা সহজসাধ্য ছিল না|ঠিক এই কারণেই মনীষীরা ওনার ওপর অসন্তুষ্ট হয়ে ওনাকে অভিশাপ দিয়েছিলেন|
মনি ঋষিরা ওনাকে যে অভিশাপ দিয়েছিলেন:-(হনুমান চললেন লঙ্কার উদ্দেশ্যে)
মুনি ঋষিরা বলেছিলেন একটা বানরের তোর মধ্যে এতটা শক্তি আছে যে তুই বনের পর বন ধ্বংস করতে পারিস| তবে তোর এই ক্ষমতা তোর অহংকারে পরিণত হয়েছে। আমি তোকে অভিশাপ দিচ্ছি এই মুহূর্ত থেকে তুই সব শক্তির কথা ভুলে যাবি আর যতক্ষণ না অব্দি তোকে কোন জ্ঞানী কোন ব্যক্তি তোকে এই শক্তির কথা স্মরণ না করাবে ততক্ষণ অবধি তুই এই শক্তি থেকে বঞ্চিত হয়ে থাকবি। এই জন্যই হনুমানজি কিছু বছর নিজের শক্তির কোন প্রয়োগ ঘটাতে পারেননি। যতক্ষণ না রাজা জাম্ববান তার পূর্ববর্তী সম্পর্কে তার থেকে স্মরণ না করিয়েছে ততক্ষণ রামায়ণের সুন্দর কান্ড অনুযায়ী যখন বানর সেনারা সীতা মাকে খুঁজতে খুঁজতে সমুদ্র তটে এসে পৌঁছালেন তখন তারা ভালো করে বুঝতে পারলেন কোন বানরের পক্ষে এই সমুদ্রতট পেরানো অসম্ভব কাজ এই সমুদ্র এতটাই বড় যে হনুমান যথা চেষ্টা করুক কিন্তু সে পার হতে পারবে না|
জাম্বোবান হনুমানজিকে কি বললেন:-(হনুমান চললেন লঙ্কার উদ্দেশ্যে)
জামবান হনুমানজিকেবললেন হে হনুমানজিএই কথাটা সত্যি যে এই সাগরকে পার করা যে কোনো সাধারণ মানবের জন্য খুবই অসম্ভব ব্যাপার কিন্তু আপনার ক্ষেত্রে তা হয়। আপনি এটা কি বলছেন আমি আমি এই অসম্ভব সাগরকে কিভাবে পার করব হনুমানজির এই প্রশ্নের উত্তরে রাজা রামমোবান তার পূর্ব অভিশাপের কথা স্মরণ করিয়ে দিলেন অভিশাপ হেতু উনার হারিয়ে যাওয়া সমস্ত শক্তির কথা ধীরে ধীরে এবার ওনার মনে পড়তে লাগলো আর দেখতে দেখতে উনি এক শক্তিমান শরীরে পরিণত হতে লাগলো। হে বালক রাজ আপনার জন্য আমি আমার ভুলে যাওয়া শক্তি আমার ফিরে পেয়েছি। এখন আমি আমার সীতামাকে খুঁজে পাওয়ার জন্য কেউ আটকাতে পারবেনা হারিয়ে যাওয়ার সমস্ত শক্তি খুজে পাওয়ার পর এবার দক্ষিণ দিকে লঙ্কার উদ্দেশ্যে রওনা দিলেন |সুন্দর কান্ড অনুযায়ী উনি ওনার যাত্রা পথে বহু রাক্ষসীদের মোকাবেলা করতে হয়েছিল যখন তিনি সমুদ্রের মাঝপথে এসে পৌঁছালেন তখন তিনি বুঝতে পারলেন ওনার চারপাশে সমুদ্রের জল ছাড়া আর কিছু নেই ঠিক এই সময় এক বিঘার জোরে বাজ পড়লো, যেন একলা খাতির জোরে শক্তিতে টেনে উঠল|
হনুমান জির সাথে রাক্ষসের দেখা:- (হনুমান চললেন লঙ্কার উদ্দেশ্যে)
এই সময় সমুদ্রের ভয়ংকর রাক্ষসী রা মাথা সস ছাড়া আগমন ঘটলো| এবং তিনি বললেন আজ পর্যন্ত আমি কোন বানরকে উড়তে দেখিনি, তুই নিশ্চয়ই কোন মাতব্বর আছিস আর আজকে আমি আমার খিদে তোকে খেয়ে মেটাবো|। মা আমি কোন দৈব জীব নই আমি একটি সাধারণ বানর যে কিনা তার মাতা সিতার কাছে লঙ্কার দিকে যাচ্ছে দয়া করে আমার পথ থেকে সরে দাঁড়ান তুই কি জানিস আমি কে আমি হলাম সব সাপেদের সাপ আমার বিষের দংশনে প্রত্যেক জীবের মৃত্যু হয়।| ওরে বানর তোর লঙ্কা পৌঁছানো অসম্ভব। আজ আমি তোকে মেরে আহার করব।| মাথা সংসার সমস্ত কথা শুনে বুঝতে পারলেন যে এনাকে বুঝিয়ে কোন লাভ হবে না| হনুমানজি যেমন বলশালী ছিলেন তেমনি বুদ্ধিমান ছিলেন উনি উনার বুদ্ধিকে কাজে লাগিয়ে জটিলতার সাথে নিজের শক্তিকে একটা চালের দানাকে ছোট্ট করে সোজাসুজি সর্ষের মধ্যে ঢুকিয়ে পুনরায় বেরিয়ে আসে মাথা আমি তোমার মুখের মধ্যে ঢুকে আবার ফিরে এসেছি আমি আপনার সবাতের মান দেখেছি, দয়া করে আপনি আমার পথ ছাড়ুন মাথা সর্ষে হনুমানের কথায় প্রচণ্ড সন্তুষ্ট হয়ে উঠলেন আর সাথে সাথে আসল রূপে ফিরে আসলেন| তখন সেই মাতার বললেন আপনার ব্যাপারে বাস্তবে যা শুনেছি তা দেখতে সবই হুবহু মিলে যাচ্ছে। আমাকে সমস্ত দেব দেবীরা বুদ্ধির পরিচয় নিতেই আপনার কাছে পাঠিয়েছে পবনপুত্র আপনি সব দিক থেকে যথাযথ উপযুক্ত আমার আশীর্বাদ সবসময় আপনার সাথে থাকবে| আপনি বিজয়ী হবেন মাথা সরষের থেকে আশীর্বাদ পেয়ে মহাবলী হনুমানজি আরো বেশি আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠলেন তারপর উনি তীব্র গতিতে লঙ্কার উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করলেন। সুন্দর কাণ্ড অনুযায়ী হনুমানজি যখন সমুদ্রের আর্থিক পথ চলে আসলেন তখন ওনার সামনে এক বিশাল আকার জিভের আগমন ঘটলো| ঠিক তখনই হনুমানজি বুঝতে পারলেন কোন অদৃশ্য শক্তি তার যাত্রাপথ অবরুদ্ধ করতে চাইছে|। এটা কেমন বিচিত্র মায়া এটা আমার শক্তির কি অবস্থা হয়ে গেল আমি সামনের দিকে আর যেতে পারছি না কেন কে তুই যেটা যে আমার পথ আটকাচ্ছিস| আমি সমুদ্রে বসবাসকারী দত্ত রাহুর মা সিঙ্গিকা| আজ আমি আমার মায়ের দ্বারা তোকে আহার করব| হনুমানজি তখন শিঙ্গিকার সমস্ত খেলা বুঝে গেলেন বুঝে গেলেন সঙ্গীতা তখন নিজের মায়াজালে সবাইকে বন্দি করে রাখে আর তারপর আহার করে, একটা কেউ আস্ত রাখে না। হনুমানজির কাছে এই রাক্ষস কে মেরে ফেলা ছাড়া আর দ্বিতীয় কোন উপায় ছিল না যেইমাত্র সিলিকা হনুমানজির আহার বানানোর জন্য প্রস্তুত হলেন ঠিক তখনই হনুমান যে নিজের চেহারা কে ধারণ করে সরাসরি রাক্ষসী জানোয়ারের মাথা ছুড়ে বাইরে ফেলে দিলেন। এই দেখে সমস্ত দেবদেবীরা হতবাক হয়ে গেলেন| মহাবলী শক্তির সামনে মাথা নত করে ফেললেন লঙ্কা যাওয়ার পথে যে সময় হনুমানজি, সশশী সিংহকার মান সামনে হয়েছিলেন ঠিক আবার ওই পথেই আর একজন অতিকায় রাক্ষসের সামনাসামনি হতে হয়েছে তাকে। যার নাম ছিল লক্ষীনী। হনুমানজি লঙ্কিনী চোখের ধুলো দিয়ে লঙ্কায় প্রবেশ করলেন কিন্তু লুঙ্গিণী ঠিক টের পেয়ে গিয়েছিলেন| এবং হনুমানজির পথ অবরুদ্ধ করে দাঁড়ালেন| তিনি তখন হনুমানজিকে লঙ্কায় প্রবেশের কারণ জিজ্ঞেস করলেন নিজে আসল কারণটি বললেন না তিনি লঙ্কিনীকে বললেন যে তিনি শুধুমাত্র লঙ্কাকে ঘুরতে এবং দেখতে এসেছে| লঙ্কিনী এসো স্পষ্ট বুঝতে পারলেন যে হনুমানজি তাকে মিথ্যে কথা বলছে। তখন তিনি নিজে কর্তব্য পালনের জন্য এক ক্ষুদ্র রূপ ধারণ করলেন আর হনুমানজির ওপর অতর্কিত আক্রমণ করলেন লংকিনের আগমন আক্রমণ করা দেখে স্ত্রীলোক হত্যা সঠিক কাজ হবে না ভেবে লঙ্কিনীকে আটকানোর জন্য ওনার ওপর এক বেদম প্রহার করলেন আর উনার মুখ দিয়ে রক্ত বেরোতে শুরু করল একজনসামান্য বানরের দ্বারা এত বেদম প্রহারের কথা মনে পড়ে লুঙ্গিনের তখন বোমা চিত্তের পূর্ব অভিশাপের কথা মনে পড়ে গেল হে প্রজাপতি বানর তোমার এই বেদন প্রহরের জন্য আমার পূর্ব অভিশাপের কথা আমার আবার মনে পড়ে গেল। এই লঙ্কার রক্ষী হওয়ার আগে আমি ব্রাহ্ম লোকের দ্বারা ছিলাম| তারপর ব্রহ্মা জিৎ এর অভিজিৎ এর ফলে আমায় রাক্ষসের উপর লঙ্কায় এসে প্রহরীর কাজ করতে হয়েছে।| কিন্তু তোমার দেওয়া এই আঘাতের ফলে আমি আমার এই ভয়ংকর রূপ থেকে আজ মুক্তি পেলাম। এবার আমি আবার নিশ্চিন্তে ফিরে যেতে পারবো।বাল্মিকী অনুযায়ী রামায়ণের সুন্দর কান্ড অনুযায়ী একমাত্র হনুমানজি হলেন যিনি মাতা সীতাকে খোঁজার জন্য পাড়ি দিয়েছিলেন অন্তহীন সমুদ্রপথে যাত্রা করেছিলেন উনি শ্রী রামচন্দ্রের সেবক হিসাবে যে বুদ্ধি ও বল সুন্দরভাবে বিচারও বিবেচনা করে প্রয়োগ করেছিলেন আর সর্বশেষে তিনি মাতা সীতাকে খোঁজ পেয়ে গেছিলেন। আর এই ছিল রামায়ণের সুন্দর কান্ডের অন্তর্গত কিছু রোমাঞ্চকর কাহিনী|