কারা কেদারনাথ মন্দিরটি প্রতিষ্ঠা করেছিল ? কে কেদারনাথ মন্দিরটি প্রতিষ্ঠা করেছিল ?

জেনে নিন কেদারনাথ মন্দিরের প্রতিষ্ঠার ইতিহাস কি ছিল ? 

হিমালয়ের কোলে অবস্থিত কেদারনাথ মন্দিরকি 12 টি যুক্তির লিঙ্গের মধ্যে অন্যতম | হিন্দু ধর্মে প্রায় ছয় মাস ধরে বরফে আচ্ছরিত মন্দিরকে ভগবান শিবের নিবাস্থল বলে মনে করা হয় | আরো মনে করা হয় যে এখানে ভগবান শিব ত্রিকোণ শিবলিঙ্গের আকারে বিরাজমান | যদিও পৌরাণিক গ্রন্থে এই মন্দির নিয়ে অনেক মতবাদ শোনা যায় | আজ আমি আপনাদেরকে মহাভারতে এই মন্দির সম্পর্কে রোমাঞ্চকর কিছু কাহিনী নিয়ে আলোচনা করব | 

কারা কেদারনাথ মন্দিরটি প্রতিষ্ঠা করেছিল ? কে কেদারনাথ মন্দিরটি প্রতিষ্ঠা করেছিল ?
কারা কেদারনাথ মন্দিরটি প্রতিষ্ঠা করেছিল ? কে কেদারনাথ মন্দিরটি প্রতিষ্ঠা করেছিল ?

মহাভারতের সাথে এই মন্দিরের যে সম্পর্ক টিতে রয়েছে সেটি আজকের এই প্রবন্ধটির মাধ্যমে আপনাদের সঙ্গে আলোচনা করব। পৌরাণিক গ্রন্থ হিসেবে এমনটা বলা হয়েছে যে পান্ডবদের নাকি মহাদেব শিব স্বয়ং দেখা দিয়েছিলেন এই জায়গায় এবং তারপর থেকেই এই জায়গায় এই মন্দিরটি প্রতিষ্ঠা করা হয় | কেদারনাথ মন্দিরের রহস্য

 

কারা কেদারনাথ মন্দিরটি প্রতিষ্ঠা করেছিল ? কে কেদারনাথ মন্দিরটি প্রতিষ্ঠা করেছিল ?

ধার্মিক গ্রন্থে বর্ণিত কাহিনী অনুসারে মহাভারতের যুদ্ধে পান্ডবদের বিজয় লাভ হওয়ার পর পান্ডবদের জ্যৈষ্ঠ যুধিষ্ঠিকে হস্তিনাপুরের রাজা হিসাবে সিংহাসনে বসিয়ে তার রাজ্যভিষেক করা হয়েছিল | এরপর প্রায় ৪ দশক পর্যন্ত যুধিষ্ঠির হস্তিনাপুরের রাজত্ব করেছিলেন | এরই মধ্যে পাঁচ পাণ্ডব একবার শ্রীকৃষ্ণের সাথে বসে মহাভারতের যুদ্ধের সমীক্ষা করেছিলেন | সেই সময় পাণ্ডবরা শ্রীকৃষ্ণ কে বললেন হে প্রভু, আমাদেরকে আমাদের ভাতৃ হত্যা ও আত্মীয়-স্বজনদের সাথে যুদ্ধের জন্য যে কলঙ্ক লেগে রয়েছে সেই কলঙ্ককে কিভাবে দূর করা যায় তখন শ্রীকৃষ্ণ পান্ডবদের বললেন , যুদ্ধে যে তোমরা জয়লাভ করেছো এটা সত্যি কিন্তু তোমরা তোমাদের গুরু এবং বন্ধুবান্ধবদের হত্যা করবার জন্য পাপের ভাগীদারি পরিণত হয়েছো এই পাপ থেকে মুক্তি পাওয়া অসম্ভব তবে এই পাপ থেকে কেবলমাত্র মহাদেবী তোমাদের বাঁচাতে পারে অতএব তোমরা মহাদেবের কাছে যাও তাকেই তোমরা স্মরণ করো | কেদারনাথ মন্দিরের রহস্য

কারা কেদারনাথ মন্দিরটি প্রতিষ্ঠা করেছিল ? কে কেদারনাথ মন্দিরটি প্রতিষ্ঠা করেছিল ?

এরপর শ্রীকৃষ্ণ দারোকানগরীতে চলে গেলেন , এরপর পাণ্ডবরা নিজের পাপ নিয়ে চিন্তায় পড়ে গেলেন এবং তারা ভাবতে লাগলেন কখন এই রাজ পাট শেষ করে তারা মহাদেবের স্মরণে যাবেন এরই মধ্যে পান্ডবরা একদিন জানতে পারলেন যে বাসুদেব তার শরীর ত্যাগ করেছেন এবং তিনি তার পরম ধামে  চলে গিয়েছেন এই শুনে পান্ডবদের আর এই পৃথিবীতে থাকা উচিত নয় বলে মনে হলো না | (কেদারনাথ মন্দিরের রহস্য) গুরু পিতামহ এবং সব বীর যোদ্ধারা সবাই সেই কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধভুমিতেই রয়ে গিয়েছিলেন মাতা জ্যেষ্ঠ পিতা এবং কাকা বিদূর ও বন ভবনে বেরিয়ে পড়লেন এবং সদা সহায়ক শ্রীকৃষ্ণ এখন আর নেই এর জন্য পাণ্ডবরা রাজ্যের সব ভার পরীক্ষিতের ওপর তুলে দেন | তখন তারা দম্পতি সমেত হস্তিনাপুর থেকে বেরিয়ে পড়েন সেখান থেকে বেরিয়ে ভগবান শিবের দর্শনের জন্য পান্ডবরা কাশি গেলেন সেখানেও তারা শিবজিকে খুঁজে পেলেননা | এরপর তারা অনেক জায়গায় শিবজিকে খোঁজার চেষ্টা করলেন তারা যেখানেই যাচ্ছিলেন শিবজি সেখান থেকে চলে যাচ্ছিলেন | কারা কেদারনাথ মন্দিরটি প্রতিষ্ঠা করেছিল ? কে কেদারনাথ মন্দিরটি প্রতিষ্ঠা করেছিল ?

 

শিবজি কেন পান্ডবদের দেখে লুকিয়ে পড়েছিলেন ?

 

এভাবে খুঁজতে খুঁজতে একদিন পাণ্ডব এবং দ্রৌপদী শিবজিকে খুঁজতে খুঁজতে হিমালয় এসে পড়েন সেখানে যখন শিবজি তাদেরকে দেখলেন সেখানে শিবজি তাড়াতাড়ি লুকিয়ে পড়লেন। কিন্তু এখানে শিবজি কে লুকিয়ে পড়তে যুধিষ্ঠির দেখে ফেললেন | সেই সময় যুধিষ্ঠির শিবজিকে বললেন হে প্রভু আপনি যতই লুকাননা কেন আমরা আপনার দর্শন ছাড়া এখান থেকে কোনমতেই যাবনা | (কেদারনাথ কোন রাজ্যে অবস্থিত)আমরা এটাও জানি আমরা পাপ করেছি বলেই আপনি আমাদের থেকে লুকিয়ে আছেন, একথা বলার পর ৫ পাণ্ডব মিলে আস্তে আস্তে হাঁটতে থাকেন তখন একটি সার তাদের ওপর আক্রমণ করেন ভীম সেই সাতটি সাথে লড়াই করতে লেগে পড়েন | সেই সময় ওই সার দুটি পর্বতের মাঝখানে নিজের মাথা লুকিয়ে ফেলে অন্যদিকে ভীম তার লেজ ধরে জোরে জোরে টানতে থাকে যার জন্য ওই শার্টটির মাথায় ঘর থেকে আলাদা হয়ে যায় যার পরে ওই স্যারটির মাথা শিবলিঙ্গের আকার ধারণ করে |কারা কেদারনাথ মন্দিরটি প্রতিষ্ঠা করেছিল ? কে কেদারনাথ মন্দিরটি প্রতিষ্ঠা করেছিল ?

 

তার কিছুক্ষণ পরেই সেই শিব লিঙ্গ থেকে শিবজি প্রকট করেন এবং পাঁচপান্ডবদের দর্শন দেন তখন শিবজি পান্ডবদের সব ভুলের মাফ করে দেন আজও সেই ঘটনার প্রমাণ আপনারা কেদারনাথের গিয়ে দেখতে পাবেন। যেখানে গেলে আপনারা দেখবেন একটি সারের মস্তক রয়েছে |(কেদারনাথ কোন রাজ্যে অবস্থিত) সেই সময় ভগবান শিবজি কে সামনে রেখে পাঁচপান্ডব মিলে প্রণাম করলেন। তারপর ভগবান শিব জি, পান্ডবদের স্বর্গের রাস্তা বলে দিলেন তারপর শিবজি অন্তর্ধান হয়ে গেলেন | কারা কেদারনাথ মন্দিরটি প্রতিষ্ঠা করেছিল ? কে কেদারনাথ মন্দিরটি প্রতিষ্ঠা করেছিল ?

 

পাণ্ডবরা সেই শিবলিঙ্গের পূজা অর্চনা করে তখন থেকেই সেই জায়গায় কেদারনাথ নামে খ্যাত এখনো সেই শিবলিঙ্গে হাজার হাজার ভক্তরা সেখানে পূজা দিতে উপস্থিত হয় তবে বছরে 6 মাস সেখানে বড় প্রচ্ছন্ন থাকে |

কিভাবে কলকাতা থেকে কেদারনাথ যাবেন?

 

আজকে আমরা জানবো কলকাতা থেকে কেদারনাথ যাওয়ার সহজ উপায়|

 

কেদারনাথ কখন খোলা থাকে ও তীর্থযাত্রীদের জন্য কেদারনাথ দর্শনের উপযুক্ত সময় কখন?

 

কেদারনাথ ধাম খোলা থাকে প্রতি বছর অক্ষয় তৃতীয়ার দিন থেকে দীপাবলি পর্যন্ত ৬ মাস কেদারনাথ মন্দির খোলা থাকে দর্শনার্থীদের জন্য| এর মধ্যে কেদারনাথ দর্শনের উপযুক্ত সময় হল প্রতিবছর মেয়ে থেকে জুন মাস এবং সেপ্টেম্বর থেকে অক্টোবর মাসে আকাশ পরিস্কার থাকায় তীর্থযাত্রীদের বেশি সমাগম লক্ষ্য করা যায়| আবার জুলাই থেকে আগস্ট মাসে বর্ষাকালে প্রতিকূল আবহাওয়ার জন্য কেদারনাথের ভক্তদের ভিড় কম হয়। তবে সেপ্টেম্বর অক্টোবর ও নভেম্বর মাসে কেদারনাথ মন্দিরের আশেপাশে বরফ পাওয়া যায়। তাই এই সময় কেদারনাথ আশার উপযুক্ত সময় এই কারণেই এই সময় ভক্তদের ভিড় বেশি থাকে,| কলকাতা থেকে কেদারনাথ যাওয়ার জন্য প্রথমেই তোমাদেরকে ট্রেনে করে হরিদুয়ার পৌঁছাতে হবে|, হাওড়া থেকে হরিদুয়ার যাওয়ার জন্য অনেক ট্রেন রয়েছে| তবে দুপুর একটার সময় হাওড়া স্টেশন থেকে উপাসনা এক্সপ্রেস অথবা কুম্ভ এক্সপ্রেস করে রওনা দিলে পরের দিন বিকেল চারটের সময় আমরা হরিদুয়ার পৌঁছে যাব| এখানে বলে রাখি কেদারনাথ মন্দিরে পৌঁছানোর জন্য তোমাদের যেতে হবে  শোন প্রাগে।

 

 এই শোন প্রাগথেকে সোজা গাড়ি করে তোমাদের পৌঁছাতে হবে গৌরিকুল| পৌঁছে তোমাদের পায়ে হেঁটে অথবা ঘোড়ার পিঠে চড়ে কেদারনাথ মন্দিরে পৌঁছাতে হবে।| হরিদুয়ার থেকে পৌঁছানোর দুটি উপায় আছে| প্রথমত জিএফ ও ইউ বাসস্ট্যান্ড থেকে বাসে শোন প্রাগে পৌঁছানো যায়| আবার হরিদুয়ার স্টেশন থেকে গাড়িতে ডাইরেক্ট গরিকুল পর্যন্ত রিজার্ভ গাড়িতে পৌঁছানো যায় মনে রাখতে হবে জি এম ও ইউ বাসে শোন প্রাক পৌঁছানোর জন্য জিএমওইউ এর অফিস থেকে বাসের টিকিট কাটতে হবে এবং এই টিকিট বাস ছাড়ার ২৪ ঘন্টা আগে দেওয়া হয় সুতরাং তোমরা যদি কেউ বাসে করে  শোন প্রাগে যেতে চাও  তাহলে ট্রেন থেকে নেমে অটো করে বা পায়ে হেঁটে চলে আসতে হবে হরিদুয়ার বাসস্ট্যান্ডে অবস্থিত জিএমওইউ এর অফিসে হরিদ্বারের স্টেশন থেকে জি এম ও ইউ অফিসের দূরত্ব দেড় কিলোমিটার| স্ট্যান্ড থেকে প্রতিদিন ভোরে পাঁচটা এবং সকাল ৭ঃ৩০ এই টাইম দুটোতে শোন  prag যাওয়ার জন্য দুটি বাস ছাড়ে|তাই যেদিন তোমরা হরিদুয়ার পৌঁছাবে ঐদিন রাতেই বাসস্ট্যান্ডে বাসের খোঁজ নিয়ে সংলগ্ন কোন হোটেলে রাত কাটিয়ে দ্বিতীয় দিন ভোরবেলায় বাসে ট্রাকের জন্য রওনা দেবেন জি এম ও ইউ বাসস্ট্যান্ডের কাছাকাছি প্রচুর হোটেল রয়েছে যার ভাড়া ৫০০ থেকে ৮০০ টাকার মধ্যে| হরিদ্বার থেকে সোনপুর আগে বাসে যেতে সময় লাগে 10 থেকে 12 ঘন্টা| এরপর  শোন প্রাগেপৌঁছে  বুলেট গাড়ির স্ট্যান্ডে সামনে সরকারি রেজিস্ট্রেশন অফিস রয়েছে যে সকল তিস্তা যাত্রীরা কেদারনাথের অনলাইন রেজিস্ট্রেশন না করে আসে তাদের সকলকে এখানে অফলাইনে রেজিস্ট্রেশন করতে হয় আমি তোমাদেরকে বলব তোমরা যারা কেদারনাথ যাত্রা থেকে এ বছর আসছো তোমরা অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করে আসবে এবং তার একটা কফি তোমাদের সাথে রাখবে এবং তার সাথে তোমরা তোমাদের পরিচয় পত্র সাথে রাখবে| এরপর সোজা বুলেটো বাড়িতে সন ট্রাক থেকে গরি কুল যেতে হবে। শেয়ার গাড়িতে সন ট্রাক থেকে গরি কুল যাওয়ার খরচ মাথাপিছু ৫০ টাকা।

 

 গৌরী কুঞ্জে ঐদিন রাতটা হোটেলে কাটিয়ে তৃতীয় দিন সকালবেলায় তোমরা রওনা দেবে কেদারনাথ ধামে এবং গৌরিকগঞ্জে থাকার জন্য রয়েছে  সরকারি জি এম ভি এন রুমের ভাড়া ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা পড়বে|। তৃতীয় দিন সকালবেলা উষ্ণ গরম কুঞ্জ স্নান করে বেরিয়ে পড়বে। কেদারনাথ ধামের উদ্দেশ্যে গৌরিকুঞ্জ থেকে কেদারনাথ ধাম এর দূরত্ব ২২ কিলোমিটার আর এই ২২ কিলোমিটার রাস্তা তোমরা পায়ে হেঁটে বা লরির কাছে অথবা ঘোড়ার পিঠে চেপে আসতে পারো| পায়ে হেঁটে মন্দিরে পৌঁছাতে তোমাদের সময় লাগবে ৮ থেকে ১০ ঘন্টা। আর যদি ঘোড়ার পিঠে চেপে মন্দিরে পৌঁছাতে চাও তাহলে সময় লাগবে ছয় থেকে আট ঘন্টা। খরচ প্রত্যেকজনের পড়বে ২৫০০ টাকা| অনেকেই মন্দিরেই ঘোড়ার পিঠে চেপে পৌঁছান। এবং তারপর পায়ে হেঁটে গৌরি কুণ্ডে পৌঁছান। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত কিছুদূরান্তর অন্তর রয়েছে রাস্তার ধারে টয়লেট এবং বিশ্রাম করার জায়গা এবং তার সাথে খাবারের অনেক দোকান এখান থেকে তোমরা সকালে ব্রেকফাস্ট সেরে নিতে পারবে। এবং দুপুরের লাঞ্চ সেরে নিতে পারবেন| ঘোড়ায় চেপে এলে মন্দির থেকে এক কিলোমিটার আগে তোমাদের নামিয়ে দেওয়া হবে সেখান থেকে তোমাদের পায়ে হেঁটে মন্দিরে পৌঁছাতে হবে মন্দিরের আশেপাশে অনেক থাকার ব্যবস্থা আছে। মাথা পিছু ৫০০ টাকা ৫০০০ টাকা পর্যন্ত বিভিন্ন ধরনের রুম রয়েছে। এরপর বিকেলবেলাটা তোমরা মন্দিরে চারপাশ ঘুরে দেখবে, প্রতিদিন বিকেল পাঁচটা থেকে মন্দিরের দরজা খুলে দেওয়া হয় এবং সন্ধ্যায় সাড়ে ছটা থেকে মন্দিরের আরতি অনুষ্ঠিত হয়। 

 

কেদারনাথ মন্দিরের সন্ধ্যা আরতি দর্শন 

 

কেদারনাথ মন্দিরের বন ভ্রমণের অন্যতম আকর্ষণীয় জিনিস হল এই সন্ধ্যা আরতি সন্ধ্যা আরতি দেখে তোমরা হোটেলে ফিরে আসবে এরপর রাতে ডিনার শেষ করে তাড়াতাড়ি শুয়ে পড়তে হবে। কারণ চতুর্থ দিন ভোরবেলা চারটের মধ্যে উঠে স্নান সেরে মন্দিরে পৌঁছাতে হবে পূজা দেওয়ার জন্য প্রতিদিন সকালবেলা মন্দিরের বাইরে পুজো দেওয়ার জন্য প্রচুর ভক্তের লাইন পড়ে। তাই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তাড়াতাড়ি স্নান সেরে পুজো দেওয়ার জন্য মন্দিরের লাইনে এসে দাঁড়াতে হবে। মন্দিরের আশেপাশে অনেক দোকান রয়েছে যেখান থেকে আমরা পুজোর সামগ্রী ও ডালা কিনতে পারব। দেড়শ থেকে 5000 টাকা পর্যন্ত পুজোর ডালা এখানে পাওয়া যায় তোমরা তোমাদের পছন্দ অনুযায়ী ডালা কিনে বাবার উদ্দেশ্যে পুজো দেবে ভোরবেলায় বাবার মন্দিরে পুজোর লাইনে দাঁড়ালে সেখান থেকে তোমরা বাহারের কোলে সূর্যোদয়ের মনোরম দৃশ্য দেখতে পারবে পুজো শেষ করে তোমরা বাবা ভোলানাথের মন্দির দর্শন করতে পারো কেদারনাথ মন্দির থেকে আরও এক কিলোমিটার উপরে এই মন্দিরে পৌঁছাতে হয় বাবা ভোলানাথের আরেকটি রূপ এই ভৈরব নাগ| এই মন্দির যেহেতু কেদারনাথ মন্দিরের থেকে কিছুটা উপরে অবস্থিত তাই এখান থেকে কেদারনাথ মন্দির এবং সমগ্র কেদার ভ্যালির দারুন ভিউ পাওয়া যায়|। এরপর রুমে ফিরে ব্যাগ পত্র গুছিয়ে ব্রেকফাস্ট করে রওনা দেবেন গৌরিকুঞ্জের উদ্দেশ্যে। গৌরিকুঞ্জে পৌঁছাতে তোমাদের বিকেল হয়ে যাবে। এরপর গৌরিকুঞ্জ থেকে শেয়ার গাড়িতে শোন প্রায়োগের  উদ্দেশে রওনা দেবেন |

 

ঋষিকেশ ধাম কিভাবে যাবেন?

 

শোন  প্রাগে পৌঁছে পরের দিন সকালে ঋষিকেশ যাওয়ার বাসের টিকিট কেটে নিতে হবে |এবং রাতটা সম্প্রাগের একটা হোটেলে কাটিয়ে পঞ্চম দিন সকাল বেলা বাসে চেপে বিকেলের আগেই তোমরা ঋষিকেশে পৌঁছে যাবে এরপর ঋষিকেশে পৌঁছে তোমরা ঋষিকেশের  রামধুলার কাছে আশেপাশে একটা  হোটেল নেবেহোটেলের ভাড়া ৫০০ টাকা রাতটা কাটানোর জন্য থাকতে হবে| রুমে ব্যাগ পত্র রেখে ফ্রেশ হওয়ার পর টোটো ভাড়া করে তোমরা সন্ধ্যা ছটার আগেই পৌঁছে যাবে ঋষিকেশ এর বিখ্যাত গঙ্গা ত্রিবেদী ঘাটে| বলা হয় ত্রিবেণী ঘাটের উপস্থিত থাকলে ব্যক্তির মন শান্ত হয় তোমরা রুমে ফিরে আসবে| এবং রাত্রি কাটানোর পর ষষ্ঠ দিন সকালবেলায় ঋষিকেশের বিখ্যাত পাঁচটি জায়গা ঘুরে দেখবে|, হোটেল থেকে বেরিয়ে প্রথমে তোমরা যাবে রামঝুলা এরপর ১০ মিনিট পায়ে হেঁটে  যাবে পাশেই রয়েছে লাক্সমান ঝুলা এই লক্ষণ ঝুলার ব্যাপারে বলা হয় লক্ষণ তার বড় ভাই রামের সাথে গঙ্গা নদীর পার করার জন্য এই ব্রিজ তৈরি করেছিল যদিও এই ব্রিজ এখন তোমরা দেখতে পাবে না কারণ এই ব্রিজে এখন কাজ চলছে। কারণ তখনকার সেই ব্রিজ মডিফাই করে আধুনিক কাজের ব্রিজ তৈরি করা হচ্ছে। রাম ঝুলা লক্ষণ ঝুলা দেখানো হয়ে গেলে তোমরা পৌঁছে যাবে ঋষিকেশের আরো একটি বিখ্যাত আশ্রম পরম আত্মা নিকেতন এই পরমাত নিকেতনে গেলেই তোমরা গঙ্গার উপরে তৈরি মহাদেবের বিশাল মূর্তি দেখতে পাবে আমি তোমাদের বলব তোমরা যদি ঋষিকেশ আশ্রমে যাও তবে একবারের জন্য হলেও এই পরমাত্মা নিকেতনে আসবেন। তোমরা এখান থেকে 50 টাকা অটো ভাড়া করে আরো একটি ঋষিকেশের মন্দির নীলকন্ঠ মহাদেব মন্দির  দর্শন করে তোমরা দুপুরবেলায় লাঞ্চ ছেলে সন্ধ্যার আগে ঋষিকেশ থেকে বাস বা অটোয় করে হরিদ্দার চলে আসবে, গাড়ি ভাড়া নেবে ১০০ টাকা হরিদ্বার পৌঁছে একটা হোটেল নিয়ে সেখানে ব্যাগ পত্র দেখে প্রথমেই তোমরা পৌঁছে যাবে হরিদুয়ারের সবথেকে পবিত্র বিখ্যাত ঘাট মরছি পড়ি ঘাটে| এই ঘাটে যাওয়ার একটাই উদ্দেশ্য সন্ধ্যা আরতি দর্শন করা| এই সন্ধ্যা আরতি দর্শন করার জন্য প্রচুর ভক্তরা এই ঘাটে এসে উপস্থিত হয় মূর্তি ঘাটে পবিত্র গঙ্গার দর্শন ও সন্ধ্যা আরতি দেখা হয়ে গেলে রুমে এসে তোমার ডিনার সেরে নেবে এর পরের দিন দুপুর বেলা তোমার  মোর কি পরি ঘাটে গঙ্গাস্নান সেরে নেবে তারপর তোমরা পৌঁছে যাবে মা মনসা দেবী ও চন্ডী দেবী দর্শন করতে| ফোর কি গৌরী  ঘাট থেকে মা মনসা দেবীর মন্দির পায়ে হেঁটে যেতে সময় লেগে 10 থেকে 15 মিনিট। এবং টোটো তে যেতে সময় লাগে ৫ মিনিট| তোমাদের বলে রাখি মা মনসা দেবী ও চন্ডী দেবী যেহেতু পাহাড়ের উপরে অবস্থিত তাই এই মন্দিরে পৌঁছাতে হলে তোমাদের উপর সাহায্য নিতে হবে। আর যদি তোমরা চাও পাহাড়ের ট্যাফিক করে তোমরা এই মন্ত্রে যেতে পারো মা মনসা দেবী চন্ডী দেবী দর্শন করে নিচে নেমে সকালের ব্রেকফাস্ট কমপ্লিট করে নেবে এরপর তোমরা হরিদুয়ারের আরো কিছু বিখ্যাত জায়গাার জন্য একটা গাড়ি বুক করে নেবে। এই গাড়ির ভাড়া নেবে এই গাড়ি তোমাদের সমস্ত হরিদ্বারের বিখ্যাত জায়গায় ঘুরে দেখাবে |

 

ভারত মাতার মন্দিরে তোমরা কিভাবে যাবে? 

 

এই গাড়ি করে তোমরা পৌঁছে যাবে হরিদুয়ারের বিখ্যাত মন্দির ভারত মাতা মন্দিরে| এই মন্দিরটির বিভিন্ন স্বাধীনতা সংগ্রামী দেশপ্রেমিক ও বিভিন্ন দেবদেবীর ও ভারত মাতা কে উদ্দেশ্য উৎসর্গ করে তৈরি করা হয়েছে| এই মন্দিরটি দর্শন করা হয়ে গেলে তোমরা পৌঁছে যাবে রাম দরবার এই মন্দিরটি হল একটি শিশমহল মন্দির এই মন্দিরের বিভিন্ন দৃশ্যের বর্ণনা করা হয়েছে যেমন  গোপি সাথে শ্রী কৃষ্ণের রাসলীলা সমুদ্রমন্থনের দৃশ্য রাম রাবণ যুদ্ধের দৃশ্য এই সমস্ত দর্শন করে তোমরা এর পাশেই রয়েছে প্রবন্ধাম এই মন্দির দর্শন করবে এই মন্দিরটি একটি শিশ মহল মন্দির এই মন্দির দর্শন করার পর তোমরা পৌঁছে যাবে বৈষ্ণব দেবীর মন্দিরে এই মন্দিরটি জম্মু ও কাশ্মীরের মা বৈষ্ণব দেবীর মন্দির কে কে উদ্দেশ্য করে তৈরি করা হয় এখানে মা পার্বতী মা লক্ষ্মী ও মা সরস্বতী এই তিনটি মায়ের মূর্তি দর্শন করতে পারবে। এ ছাড়া এখানে বহু দেবদেবীর মূর্তি রয়েছে এই মন্দির দর্শন করে তোমরা পৌঁছে যাবে হরিদ্বারের আরো একটি বিখ্যাত মন্দির লাকস মহাদেব| হরিদ্বারের সমস্ত মন্দিরগুলি ভালোভাবে দর্শন করার পর গাড়িতে করে হোটেলে ফিরে আসবে এবং প্রত্যেকদিন রাতে হরিদ্বার স্টেশন থেকে দশটা থেকে বারোটার মধ্যে রয়েছে উপাসনা এক্সপ্রেস |তোমরা সে ট্রেনে চেপে কলকাতার উদ্দেশ্যে রওনা দেবে

Prokash Durlov

আমার নাম প্রকাশ করলাম আমি একজন প্রফেশনাল ব্লগার | ব্লগিং করি এবং ব্লগিং থেকে যেটুকু অর্থ উপার্জন করি সেটুকু আমার সংসারের কাজকর | আমি ২০১৩ সাল থেকে ব্লগিং করছি ব্লগিং ক্যারিয়ারে অনেক ওঠানামা হয়েছে তবুও আমি ব্লক থেকে ছাড়িনি আজও পর্যন্ত ইন্টারনেটের মাধ্যমে সমস্ত ধরনের ইনফরমেশন দর্শকের সামনে তুলে ধরছি |

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন

GP Global