রাবণ ও তার ভাইদের জন্মের আসল রহস্য জেনেনিন ?

লঙ্কার রাজা রাবণকে মানুষ   অনৈতিকতা দুষ্টতা কাম ক্রোধ  লোভ অহংকার ও অধর্মের প্রতীক বলে মনে করেন | কিন্তু আপনি কি জানেন রাবণ একজন কৃতার্থ ব্রাহ্মণ ছিলেন তাই এত বিদ্বান ও ব্রাহ্মণ বংশে জন্ম নেওয়ার পরেও এমন কি হলো যার জন্য রাবণকে রাক্ষস বলে মনে করা হলো | আজকের এই প্রবন্ধটিতে আপনারা জেনে নেবেন কেন রাবণকে রাক্ষস বলে মনে করা হতো |

রাবণ ও তার ভাইদের জন্মের আসল রহস্য জেনেনিন ?

রামায়ণের রাক্ষস দের নাম

লঙ্কার রাজা রাবণকে মানুষ   অনৈতিকতা দুষ্টতা কাম ক্রোধ  লোভ অহংকার ও অধর্মের প্রতীক বলে মনে করেন | কিন্তু আপনি কি জানেন রাবণ একজন কৃতার্থ ব্রাহ্মণ ছিলেন তাই এত বিদ্বান ও ব্রাহ্মণ বংশে জন্ম নেওয়ার পরেও এমন কি হলো যার জন্য রাবণকে রাক্ষস বলে মনে করা হলো | আজকের এই প্রবন্ধটিতে আপনারা জেনে নেবেন কেন রাবণকে রাক্ষস বলে মনে করা হতো |

 

প্রকৃত অর্থে আমাদের সনাতন ধর্মের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ রামায়ণে রাবণের উল্লেখ পাই যেখানে শ্রীরামের সমগ্র জীবনের বর্ণনা পাওয়া যায় | আর এই রাবনী ছিল সিরামের জীবনের এক গুরুত্বপূর্ণ অংশ , আমরা রামায়ণের সম্পূর্ণ অর্থ জানার পর বুঝতে পারি রাবনকে ছাড়া রামায়ণ রচনা করাটা খুবই কঠিন কাজ হয়ে যেত | এর কারণ হলো যেকোনো নায়কের পাশে যেমন ভিলেনের প্রয়োজন হয় তেমন রামায়ণের মধ্যে একমাত্র ভিলেন হলো এই রাবণ | রাবণ ও তার ভাইদের জন্মের আসল রহস্য জেনেনিন ?

 

আমরা আপনাদেরকে বলি বাল্মিকী রামায়ণ অনুসারে সোনার নগরী লঙ্কার রাজা রাবণ ছিলেন এক ব্রাহ্মণ ঋষি পুলস্টের নাতি ও মহর্ষি বিশ্রোবা এবং রাক্ষসী কইকিসির সন্তান | রাবণ ছিলেন একজন পরম শিবভক্ত এবং দুর্ধর্ষ রাজনীতিবিদ মহান খ্যাতিমান মহান পরাক্রমশালী যোদ্ধা অত্যন্ত শক্তিশালী শাস্ত্রের গভীর জ্ঞান এবং মহান পন্ডিত রাবণের রাজত্বকালে লঙ্কার গৌরব চরম শিখরে পৌঁছায় এবং তিনি তার প্রাসাদ সম্পূর্ণরূপে সোনার দ্বারা তৈরি করেছিলেন | তাই তার লঙ্কা শহরকে সোনার লঙ্কা বা শোনার শহরও বলা হয়ে থাকে | রাবণ ও তার ভাইদের জন্মের আসল রহস্য জেনেনিন ?

 

কিভাবে রাবণের জন্ম হয়েছিল ? মৌশ্রী বিশ্বভার মত এক ব্রাহ্মণের পুত্র কি হবে রাক্ষসে পরিণত হয়েছিল ? 

বাল্মিকী রামায়ণের উত্তরকান্ড অনুসারে লংকায় তিনজন অত্যন্ত নিসংস ভাই ছিলেন মালি সুমালি এবং মালাই বাদ এই তিনজনই ছিলেন বোম্ভাজীর পরম ভক্ত | এই তিন রাক্ষস ব্রহ্মা জির চরম সাধনা করেছিলেন তাদের এই তপস্যায় খুশি হয়ে ব্রহ্মাজি তাদের বলবান হওয়ার আশীর্বাদ প্রদান করেন | সেই আশীর্বাদ পাওয়ার সাথে সাথেই তিন ভাই স্বর্গ সর্বমত্য ও নরক তিন খনে থাকা দেবতাদের সঙ্গে সঙ্গে মানুষ ও ঋষিদের ওপর চরম অত্যাচার চালাতে লাগলেন | কিন্তু যখন মালি সোমালি ও মালাইবাদের দুর্ধর্ষতা এবং নিশংসতা অত্যাধিক বেড়ে যায় তখন সমস্ত ঋষি মনি এবং দেবতাগণ পরম পিচ্ছি দেবতা শ্রীবিষ্ণুজীর কাছ থেকে সাহায্যের জন্য উপস্থিত হন এবং ভগবান বিষ্ণুকে তিন রাক্ষস ভাইয়ের অত্যাচারের কথা বলেন | তাদের সকলের কথা শুনে ভগবান বিষ্ণু তাদেরকে আশ্বস্ত করলেন যে তোমরা সবাই নির্ভয়ে আপন আপন লোকে যাও এবং জীবন যাপন করতে থাকো আমি খুব তাড়াতাড়ি এই রাক্ষসদের ধ্বংস করব আর আমি এই তিন লোককে তাদের অত্যাচার থেকে মুক্ত করব | রাবণ ও তার ভাইদের জন্মের আসল রহস্য জেনেনিন ?

 

এরপর এই তিন ভাই মালী সোমালি এবং মালাইবাদ ভগবান বিষ্ণুর এই কথা জানতে পেরে তাদের সমগ্র সৈন্য বাহিনী নিয়ে ইন্দ্রলোকে আক্রমণ করেন এরপরে ভগবান বিষ্ণু ইন্দ্রলোকে এসে সমগ্র অসুরদের  সাথে যুদ্ধ করে যুদ্ধের কিছুক্ষণ পরেই ভগবান বিষ্ণু মালি সহ অন্যান্য রাক্ষসৈন্যদের বধ করতে থাকে | আর বাকি ভাইয়েরা বিষ্ণুর ভয়ে সেখান থেকে পালিয়ে লঙ্কায় আশ্রয় নাই পরে সেখান থেকে পালিয়ে তারা পাতার লোকে আশ্রয় নিতে থাকে | কিছু বছর পর সোমালি পৃথিবী পরিভ্রমণে গেলেন সেখানে গিয়ে তিনি ধনের দেবতা কুবের কে দেখতে পেলেন কিন্তু ভগবান বিষ্ণুর ভয়ে তিনি সেখান থেকে আবার পাতার লোকে ফিরে এলেন এবং সেখান থেকে তিনি সকলকে বললেন আমাদের আরো কিছুদিন এই পাতার লোকেই আশ্রয় নিয়ে থাকতে হবে তবে তিনি ভাবতে লাগলেন কিভাবে সমগ্র দেবতাদের পরাজয় করা যায় ও নিজেদের বিস্তার স্থাপন করা যায় | রাবণ ও তার ভাইদের জন্মের আসল রহস্য জেনেনিন ?

 

তখনই তিনি পৃথিবীতে থাকা কুবেরের কথা মনে করলেন এবং তিনি তখন থেকে কুবের সম্পর্কে সমস্ত কিছুই জানতে পারলেন কুবের মৌশ্রী বিশ্বভার পুত্র ছিল এবং তিনি ভাবতে লাগলেন বনশ্রী বিশ্বভার সঙ্গে কন্যার  বিবাহ দেবেন তাহলে খুব শিগ্রই তার কন্যা কুবেরের মতো পুত্র লাভ করবেন তার ফলে রাক্ষস বংশ ভালো থাকবে | তখন সোমালি তার মেয়ে কইকৃষির কাছে গিয়ে বললেন এই কন্যা কই কিছুই তুমি এখন বিবাহের জন্য প্রস্তুত হয়ে উঠেছ কিন্তু আমার কাছে আমার ভয়ে কেউ তোমার বিয়ের কথা বলতে আসেনা | আর এর জন্য তুমি মহান ও শক্তিশালী বিশ্বভার সঙ্গে বিবাহ করে এক শক্তিশালী পুত্র সন্তানের জন্ম দাও যা রাক্ষস বংশের ভবিষ্যৎকে উজ্জ্বল করবে ও আমাদের বংশ কে আরো আগে এগিয়ে নিয়ে যাবে | কারণ সেই পুত্রই পারবে আমাদের এই দেবতাদের অত্যাচার থেকে আমাদের রক্ষা করতে এবং আমাদের বংশকে আরো আগে এগিয়ে নিয়ে যেতে | আপনারা জেনে হয়তো অবাক হবেন রাক্ষস বংশের জন্মগ্রহণ করার ফলেও কই কিসি  কিন্তু পরম ধার্মিক ছিলেন, তাই পিতার আনুগত্য করা তার ধর্মের মধ্যে ছিল | এই ধর্ম পালন করে তিনি মহশ্রী বিশ্ববাকে বিয়ে করার উদ্দেশ্যে পাতার লোক থেকে পৃথিবী লোকে রওনা দেন পাতার লোক থেকে পৃথিবী লোকে পৌঁছাতে তার সময় লাগে তখন সময় লাগে ঠিক বৃষ্টি পড়ছিল সন্ধ্যে হয়ে গিয়েছিল | সেই সময় বিশ্রভা অগ্নি অস্ত্র পড়ছিল বিশ্বভায়ের কাছে পৌঁছে তিনি প্রথমে তার চরণ স্পর্শ করলেন তারপর তার ধ্যান সমাপ্তের জন্য অপেক্ষায় থাকলেন | রাবণ ও তার ভাইদের জন্মের আসল রহস্য জেনেনিন ?

 

ধ্যান শেষ করার পর তার কাছ থেকে তার নাম এবং তার পিতার নাম এবং তার আশ্রমে আসার কারণটা জিজ্ঞাসা করলেন তার সব কথা শোনার পর মহশ্রীতাকে বিবাহ করবার জন্য প্রস্তুত হন | একজন ভালো স্ত্রী হিসেবে তিনি তার সেবা যত্ন করলেন এবং আশ্রমের দেখাশোনা করলেন |  একদিন তার স্বামী বিশ্ববা খুশি হয়ে তাকে একটা বর চাইতে বললেন আমাকে একটি পুত্র সন্তান দিন তখন বিশ্বভা তাকে বললেন তুমি যা চাইবে তাই পাবেন তুমি আমার কাছে অবেলায় এসেছিলে তাই তোমার পুত্ররা ভয়ংকর রূপবান হবেন | এবং কোন অন্যায় কাজের তৃপ্ত হবেন | তখন কইকিসি তাকে বললেন স্বামী তুমি এমন কি বলছ আমি তোমার মত একজন পুত্র লাভবান করতে চাই | তখন মহস্রি, বিশ্বভা বললেন তোমার তৃতীয় পুত্র আমার মতোই ধর্মের ভালো হবে | একথা বলে কিছুদিন পর কই গেছি ১০ টি মাথাযুক্ত দশটি হাত যুক্ত এক কাল এবং ভীষণ আকার যুক্ত সন্তানের জন্ম দেন | একথা শুনে কইকৃষি বিশ্ববাকে বললেন হে প্রভু, আমি তোমার কাছে এমন সন্তান চাইনি বিশ্ব বাবা বলল তুমি এক শক্তিশালী এবং অদ্ভুত সন্তান চেয়েছিলে যা আমি তোমাকে দান করলাম | 

 

দশটি মাথা থাকার কারণে বিশ্বতাকে দশ দিক নামে নামঙ্কিত করেন পরবর্তীকালে তাকে দশানন বা রাবণ নামেও আমরা সকলে জানতে পারি |  এরপরে কইকিসি কুম্ভকর্ণকে জন্ম দিয়েছিলেন যার আকার ছিল অনেক বড় এক সময় কই কিছুই এক সুন্দরী কন্যা সন্তানের জন্ম দেন  যার নাম দিয়েছিল সর্বনাকা তারপরে তিনি ধার্মিক বিভীষণ এর জন্মদেন যিনি পিতার মত সত্য ও ধর্মের অনুসারী ছিলেন | এই বিভীষণের জন্মের সময় আকাশ থেকে ফুলের বর্ষণ শুরু হয় | রাবণ যখন সীতাকে হরণ করে লঙ্কায় নিয়ে আসে তখন এই বিভীষণ মাতা সীতাকে সম্মানের সহ লংকায় থাকার জন্য সম্মানিত করলেন | এবং রাবনকে সম্মানের সঙ্গে এই সীতা মাতা কে রামের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার আর্তনাদ জানালেন কিন্তু অহংকার এই রাবণ এই বিভীষণের কথা শোনেননি সেই সময় | এবং পরবর্তী সময়ে এই বিভীষণ প্রভু রাম কে এই রাবণের মৃত্যুর রহস্যের কথা জানিয়ে দেন

Prokash Durlov

আমার নাম প্রকাশ করলাম আমি একজন প্রফেশনাল ব্লগার | ব্লগিং করি এবং ব্লগিং থেকে যেটুকু অর্থ উপার্জন করি সেটুকু আমার সংসারের কাজকর | আমি ২০১৩ সাল থেকে ব্লগিং করছি ব্লগিং ক্যারিয়ারে অনেক ওঠানামা হয়েছে তবুও আমি ব্লক থেকে ছাড়িনি আজও পর্যন্ত ইন্টারনেটের মাধ্যমে সমস্ত ধরনের ইনফরমেশন দর্শকের সামনে তুলে ধরছি |

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন

GP Global