রাবণের মৃত্যুর পর সূর্পনাকা কোথায় গেল ? জানুন সূর্পনাকার শেষ পরিণতি ?
রামায়ণের গুরুত্বপূর্ণ অন্যতম চরিত্র হলো সূর্পনাকা তিনি ছিলেন লঙ্কার রাজা রাবণের বোন | হয়তো সূর্পনাকা না থাকলেই রামলীলা হতোনা , এই সূর্পনাকে এই কেন্দ্র করে তৈরি হয় রাম ও রাবণের সংগ্রাম | রাম ও রাবনের সাথে যে সংগ্রামটি হয়েছিল সেটি এই সুরকো নাগাকে কেন্দ্র করেই হয় এর কারণ আজকের এই আর্টিকেলে একদম ডিটেলসে তোমাদের সঙ্গে আলোচনা করব।
এই রাম এবং রাবণের সাথে যখন যুদ্ধ হয়েছিল রাবণ বধের পর এই সূর্পনাকার কি হাল হয়েছিল কোথায় গিয়েছিল তার শেষ পরিণতি কি ছিল এগুলি কিন্তু আমরা সকলেই জানিনা এর সম্পর্কে যদিও আমাদের কৌতুহল এটুকুতেই সীমাবদ্ধ নয় আগের আর্টিকেলে আমরা জেনেছি রামায়ণের পর হনুমান কোথায় গিয়েছে এখনো পর্যন্ত বিরাজমান রয়েছে পৃথিবীতে আটজন অমর বর প্রাপ্ত দেবতাদের মধ্যে অন্যতম হলেন এই হনুমানজি তবে তিনি তো আমাদের দেবতা রামায়ণে তার সম্পর্কে আমরা অনেক মহত্বের ও বীরের পরিচয় লাভ করি এই হনুমানজি। কিন্তু যাকে কেন্দ্র করে এই রামায়ণ হয়েছিল সেই সূর্পনাকার শেষ পরিণতি জানতে আমাদের সকলেরই মনে ইচ্ছা হয়ে থাকে সেটাই আলোচনা করব আপনারা আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়লে অবশ্যই জানতে পারবেন আপনার মনে থাকা সেই সমস্ত প্রশ্ন উত্তরগুলি |
সর্বনাকা কে ছিলেন ? Where did Surpanaka go after Ravaa’s death?
সুর্পনাকা সমাজে রাবনের বোন হিসেবেই পরিচিত। ঋষি, বিশ্রভা ও তার স্ত্রী কইকেসির কন্যা তিনি কন্যা তিনি তাকে বাল্মিকী কুচ্ছিত বলেই বর্ণনা করেছেন | পিতৃসত্তা পালন করতে ১৪ বছরের জন্য যখন রামচন্দ্র তার ভাই ও স্ত্রীকে নিয়ে যখন বনবাসী গিয়েছিলেন | সেখানে রামচন্দ্রের সাথে প্রথম দেখা হয়েছিলেন এই সূর্পনাকার এবং প্রথম দেখাতেই সূর্পনাকা কাম জর্জরিত হয়ে রামচন্দ্র কে বিয়ে করতে চেয়েছিলেন তখন রামচন্দ্র তাকে জানিয়েছিলেন তিনি বিবাহিত | তখন সর্বনাকা লক্ষণকে বিয়ে করতে চাইলে লক্ষণও তাকে প্রত্যাখখাত করেন | তখন সুর্পানাকে মনে করেন সীতার উপস্থিতিতে তাকে প্রত্যাখাত করা হয়েছে তখন সুর্পনাখা রেগে গিয়ে সীতাকে খেতে গেলে রামের আদেশে লক্ষণ সূর্পনাকার নাক ও কান কেটে দেন |
লক্ষণ কেন সুর্পানাকার নাক কেটেছিল ?

তখন রক্তাক্ত সুর্বণাকার প্রথমে তার রক্ষক ক্ষর ও দূষকের কাছে গিয়ে নালিশ করে কিন্তু রাম ও লক্ষণের হাতে ক্ষর ও দূষকের মৃত্যু হয় | তারপর সুর্বণাকার রাবণের কাছে যাই এবং সব বৃত্তান্ত জানান রাবণ কে বলে রাক্ষস গোষ্ঠীর নাক কেটেছে এই রাম ও লক্ষণ তাদের কাছে আছে সুন্দরী সীতা যে রামের যোগ্য নয় তার আকর্ষণীয় চেহারা ও গায়ের রং আমি কখনোই দেখিনি দাদা সে শুধু তৈরি হয়েছে তোমার জন্য। তুমি সীতাকে নিয়ে আসো সুর্বণাকা জানত তার দাদা বিশ্ব বিজয়ী তাকে কখনো কেউ হারাতে পারবে না আর রাম লক্ষণ কি করে তার বোনকে আঘাত করে এজন্যই রাবনকে সমস্ত বৃত্তান্ত জানায় এবং সীতাকে অপহরণ করার জন্য আদেশ করেন | তখন রাবণ যখন সীতাকে অপহরণ করে লঙ্কায় নিয়ে আসে আর এই ছিল রাবণের সবচেয়ে বড় ভুল এই ভুলের জন্যই হনুমানের লংকা কান্ড কুম্ভ কান্ডের অকাল মৃত্যু বিভীষণের সত্যের পথ অবলম্বন আরো অনেক কিছু আমরা জানতে পারি এই একটিমাত্র ভুলের জন্য |
রাবণ বধ ও রামের সীতাকে উদ্ধার করে নিয়ে আসার সম্পূর্ণ মূলে ছিল এই সূর্পনাকা তাঅনেকেই মনে করেন | কথিত আছে যে রাবণের হাতে সুর্পণাকার স্বামীর মৃত্যু হয়েছিল বলে এমন পরিকল্পনা নিয়ে রাম ও রাবনের মাঝে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি করেছিল এই সুর্বণাকায় | যদিও নিত্যান্ত ঘটনার বলে এমনটা ঘটেছিল বলে অনেক শ্রীলঙ্কাবাসী মনে করেন | Where did Surpanaka go after Ravana’s death?
রাবণের মৃত্যুর পর সূর্পনাকা কোথায় গেল ? Where did Surpanaka go after Ravana’s death?
সূর্পনাকা কিন্তু রাবণের থেকে কোন দিকেই কম নয়, তিনি এক ভয়ংকর রাক্ষসী ছিল জানা যায় তিনি বিদ্যুৎজিমা নামক এক রাক্ষস কে বিবাহ করেছিলেন আর তাদের এই সম্পর্কই রাবণ মেনে নিতে পারেনি “এর কারণ ছিল রাক্ষসদের সঙ্গে দানবদের ছিল অত্যন্ত শত্রুতা” পরে রাবণের স্ত্রী বন্দনার কথাই রাবণ তাদের বিবাহর সম্পর্ক টিকে মেনে নেন তবে এই সম্পর্ক বেশিদিন টেকেনি তাদের সূর্পনাকার স্বামী ধীরে ধীরে অত্যন্ত লোভী হয়ে ওঠেন তিনি রাবনের সাম্রাজ্যের ওপর অধিকার জমাতে যান এর ফলে এমন এক সময় আসে যখন তিনি রাবণকে আক্রমণ করে ফেলেন তখন ওই রাবণের হাতে মৃত্যু হয় তার যদিও রাবণ তাকে ইচ্ছাকৃত ভাবে মারেননি | এই ঘটনাটা জানার পর স্বল্পোনাকা অত্যন্ত দুঃখী হয়ে পড়েন তখন থেকেই দাদার প্রতি এক প্রতিশোধের ভাবনা জন্মায় সুর্পণাকার মনে | এই ঘটনার পর বহু বছর লঙ্কায় এবং দক্ষিণ ভারতের জঙ্গলে কাটান যেখানে তার আত্মীয় খড় এবং দুষার থাকতো, সেই সময় তার কানে যায় রাম এবং রাবণের কথা যারা সেই জঙ্গলেই বনবাসী হয়ে এসেছিলেন শুভ নাগা জানেন রাম এমন এক যোদ্ধা যার হাতে তারকার রাক্ষসের মত শক্তিশালী রাক্ষসের মৃত্যু হয়েছে | তখন সূর্পনখা জানতে পারে এই রামের হাতেই রাবণের মৃত্যু সম্ভব আর তার প্রতিশোধা একমাত্র এই রামই নিতে পারবে | এরপর supanaka ছলেবলে রামের কাছে যান বিয়ের প্রস্তাব রাখে সীতাকে মারতে যান এবং রামের আদেশে যখন তার নাক এবং কান কাটা হয় লক্ষণের দ্বারা তখন সে সমস্ত কাহিনীটি দিয়ে গুছিয়ে নিয়ে রাবনকে জানাই আর রাবণের ও রামের মাঝে একটা দ্বন্দ্ব সৃষ্টি করে যার ফলে হয় সীতার অপহরণ এবং সর্বশেষে রামের সীতাকে উদ্ধার ও রাবণবধ | এইটুকু আমরা সকলেই জানি কিন্তু এরপর সূর্পনাকার যে পরিণতি হয়েছিল সেটা আমাদের সকলেরই অজানা | Where did Surpanaka go after Ravana’s death?
রাবণের মৃত্যুর পর সূর্পনকা রাক্ষস কুলের গুরু শুক্লা চার্জের কাছে গিয়েছিলেন এবং জঙ্গলে তার আশ্রম এই থাকতে শুরু করেছিলেন | রাক্ষসদের বংশ যাতে সমাপ্ত না হয় এজন্য শুক্লাচার্য ভগবান শিবের আরাধনা শুরু করেন আর তার আরাধনায় ভগবান শিব সন্তুষ্ট হয়ে শুক্লাচার্যকে দর্শন দেন এবং ভগবান শিব শুক্লা চার্য কে একটা শিবলিঙ্গ দিয়ে বলেন যেদিন কোন বৈষ্ণব এর ওপর গঙ্গাজল অর্পণ করবেন আর সেইদিন রাক্ষসদের সমস্ত বংশ সর্বনাশ হয়ে যাবে | তার এই কথার পর রাক্ষস গুরু শুক্লাচার্য রাবনের বোন সুর্পনাকার দ্বারা এই শিবলিঙ্গটিকে সৌদি আরবের মক্কা মদিনায় যেখানে মুসলিমরা বছরে একবার ওই শিবলিঙ্গটির দর্শন করতে যান সেটি হচ্ছে ভগবান মহাদেবের সেই শিবলিঙ্গ যেটি মুসলিম ধর্ম প্রাধান্য দিয়েছে | Where did Surpanaka go after Ravana’s death?
মুখোমুখে শোনা গেছে এরপর তিনি লঙ্কার রাজা বিভীষণের সাথে চিরকাল সেখানেই থেকে যান | এরপর জানা যায় কিছু বছর পর নাকি সূর্পনাকার মৃত শরীর সমুদ্রে ভাসমান অবস্থায় পাওয়া গিয়েছে | রাম ও রাবণের যুদ্ধের ফলে তার পরিবারের সকল ভাই ও আত্মীয়-স্বজন একের পর এক মারা গিয়েছে এবং তার নাক কেটেছে যার ফলে তিনি তার চেহারা এমনিতেই সকলের থেকে দূরে রেখেছে আর রাক্ষস বংশের প্রতি তার ভালোবাসার জন্য তিনি ধীরে ধীরে নিজেকে সমস্ত কিছু থেকে বঞ্চিত রেখে রাক্ষস কুলের ভালো চেয়েছে | Where did Surpanaka go after Ravana’s death?
তাহলে আর্টিকেলটির শেষে আপনারা হয়তো বুঝতে পারলেন রাম ও রাবনের মাঝে দ্বন্দ্ব লাগাবার পিছনে কি কারণ রয়েছে সুর্পনাকার এবং সুর্পনাকার শেষ পরিণতি সম্পর্কেও আপনারা জানতে পারলেন যদি ভালো লেগে থাকে আর্টিকেলটি পরে তবে অবশ্যই আপনারা কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করে যাবেন |