রামায়ণের পর হনুমান কোথায় গেল সেই রহস্য জেনে নিন ?
বজরংবলী কথার অর্থ হল বজ্রের মত শরীর যার রামলীলার সাথে জড়িত হনুমানজির এমন অনেক কাহিনীর ইতিহাস রয়েছে যা আপনি শুনলে চমকে যাবেন হিন্দু ধর্মে একজন প্রসিদ্ধ দেবতা যাকে দেশে এবং বিদেশে সমস্ত জায়গায় প্রসিদ্ধ এক দেবতা | হনুমান এমন এক দেবতা তার কোটি কোটি ভক্তরা এখনো পর্যন্ত মনে করেন হনুমানজি এখনো জীবিত রয়েছে কারণ তার মৃত্যুর কোন প্রকার প্রমাণ এখনও পর্যন্ত কোথাও মেলেনি | সত্যযুগ ক্রেতা যুগ ও কলিযুগে তার জীবিত থাকার বেশ কিছু প্রমাণ রয়ে গেছে যেগুলি নিয়েই মূলত আজকের এই আর্টিকেলে আমরা আলোচনা করব |
রামায়ণের পর হনুমান কোথায় গেল সেই রহস্য জেনে নিন ?
সত্যযুগ– সত্য যুগের একদম শেষভাগে হনুমানজির মাতা অঞ্জনার 7000 বছরের এক তপস্যার ফলে শিবকে সন্তুষ্ট করায় শিবের এক অংশ হিসেবে পান হনুমানজিকে জন্মের পর থেকে হনুমান পরিচিত পাই পবনপুত্র ও শিবের অংশ রূপে কেশরী নন্দন রূপে আমরা সকলেই জানি তাকে |
ক্রেতা যুগ– হিন্দু পুরাণ অনুযায়ী ক্রেতা যুগে রামলীলা ঘটেছিল এমনটাই বলা আছে আর রামায়ণে হনুমানের প্রবল অস্তিত্ব সম্পর্কে আমরা সকলেই কমবেশি জানি হিন্দু ধর্মগ্রন্থ অনুযায়ী জানা যায় হনুমানজি তিনি অমরত্ব লাভ করেছিলেন শোনা যায় যতদিন রাম ভক্তদের মুখে রাম নামটি থাকবে ততদিন হনুমানজি বেঁচে থাকবেন | হিন্দু পুরাণে ভগবান বিষ্ণু অর্থাৎ রামের পৃথিবী থেকে বিদায় নেওয়ার কথা আমরা শুনেছি কিন্তু হনুমানজির সম্পর্কে এমন কোন কথা বর্ণিত নেই | এই পৃথিবীতে ৮ অমর চরিত্রের মধ্যে অন্যতম হনুমানজি | রামায়ণের পর হনুমান কোথায় গেল সেই রহস্য জেনে নিন ?
রামায়ণের পর হনুমান কোথায় গেল সেই রহস্য জেনে নিন ?
দ্বাপর যুগ– মহাভারতের ঘটনা ঘটেছিল দ্বাপর যুগে সেই যুগেও হনুমানজির বেঁচে থাকার অস্তিত্বের প্রমাণ রেখে গিয়েছে যখন ভীম মহাদেবের এক কঠোর সাধনায় লিপ্ত ছিল এবং মহাদেবের জন্য পূজা অর্চনা করার জন্য প্রস্তুত হচ্ছিলেন সেই সময় একটি বাঁদর তাকে প্রচন্ড ক্ষিপ্ত করছিল ভগবানের জন্য দেওয়া ভোগগুলো বারে বারে খেয়ে নিচ্ছিল যেমন লাড্ডু ও ফল প্রসাদ গুলি, সেই সময় ভীম ক্ষুদ্ধ হয়ে যখন সেই মায়াবী বানরকে মারতে যান তখন বাঁদরের লেজটি ধরে তোলার চেষ্টা করছিল বারেবারে কিন্তু সে ব্যর্থ হচ্ছিল তখন ভীম বলে আমিও মায়াবী। আমিও কিন্তু তোমাকে মারতে পারি। তখন ভীম তার গলা নিয়ে যখন ছুটে গেল ওই বানরের দিকে তখন সে তার আসল রূপ ভীমকে দেখেছিল সেই সময় ভীম হনুমানজির দর্শন পেয়েছিল এবং হনুমানজি তাকে দর্শন দিয়ে আশীর্বাদ করেছিল যে তাকে কেউ কখনো হারাতে পারবে না শক্তির দ্বারা | সমুদ্র লঙ্ঘনের সময় হনুমানজির রূপ কেমন ছিল তাও দেখবার জন্য সেই সময় ভীম তাকে অনুরোধ করেন তখন হনুমানজি তাকে তার বিশাল পর্বতের মতো রূপ তাকে দর্শন করান | কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে হনুমানজি আড়াল থেকে ভীম কে প্রচুর সাহায্য করেছিল |
মহাভারতের যুদ্ধে অর্জুনের রথের সাথে যুক্ত ছিলেন হনুমানজি। যুদ্ধ শেষে তিনি তার আসল রূপ দেখান যার জন্য অর্জুনের রথ খেয়ে কোনোভাবেই কেউ আটকাতে পারছিল না রথটা এতটাই শক্তিশালী ও মজবুত ছিল যে হবে না কেন বজরংবলী তাতে বিরাজমান ছিল যে বজ্রের মতো শক্তি যার তাকে কে সরাতে পারবে | মহাভারতের শেষের সঙ্গে সঙ্গে অর্জুনের সেই রথটি অদৃশ্য হয়ে যায় | অর্জুন যখন শ্রীকৃষ্ণ কে প্রশ্ন করেন সে রথটি কেন এত অস্ত্রশস্ত্রের পাহাড়েও কিছু হচ্ছিল না তখন শ্রীকৃষ্ণ তাকে সমস্ত কথা বলেছিল |রামায়ণের পর হনুমান কোথায় গেল সেই রহস্য জেনে নিন ?
কলিযুগ- কলি যুগে ও হনুমানের অস্তিত্বের বর্ণনা পাওয়া যায় ১৬০০ খ্রিস্টাব্দে তুলসীদাসকে রামায়ণের কাহানি লিখতে অনুপ্রেরণা দিয়েছিলেন স্বয়ং হনুমানজি,এরপরে রামদার স্বামী, শ্রী সত্য সাই বাবা এরা সকলেই হনুমানজীর দর্শন লাভ করেছিল বলেই দাবি করেন এরপরে শোনা যায় তিনি হিমালয় পর্বতের সংলগ্ন জঙ্গলে এখনো ঘুরে বেড়াচ্ছে | শ্রীলংকার অধিকাংশই জনজাতি বিভীষণের বংশধর বলে পরিচয় দেন কিন্তু এদের মধ্যে মাতাল নামের এক ছোট্ট আদিবাসী গোষ্ঠী আছে যাদের হনুমান জি বলেছিলেন প্রত্যেক ৪১ বছর অন্তর তিনি তাদের দর্শন দেবে তখনই তার অস্তিত্ব সকলেই বুঝতে পারবে | শ্রীলঙ্কা সরকার থেকে এটাও দাবি করেন যে সেই জনজাতি বিগত ৪১ বছরে হনুমানজির দর্শন লাভ করে আসছে | এই বাসিন্দারা নাকি এখনো পর্যন্ত মানব সভ্যতা থেকে অনেকটাই দূরে রয়েছে ঈশ্বরের প্রতি ভক্তি আরাধনা ও জঙ্গলের পরিবেশের সাথে নিজেদেরকে মানিয়ে নিয়ে এখনো পর্যন্ত জীবিত রয়েছে তাদের কাছে এমন কিছু মন্ত্র আছে যার মাধ্যমে তারা সরাসরি হনুমানজির সাথে নিজেদের মনোবাসনা কামনা ও চাহিদার পূরণ করতে পারে এমনই একজন দেবতা যা নিজের জন্য নিজের বংশের জন্য কিছুই করেননি শুধুমাত্র তাদের ভক্তদের জন্য তার অস্তিত্বের পরিচয় দিয়ে তাদের সমস্ত সুখ-দুঃখ পাশাপাশি তাদের মনের কামনা বাসনা পূরণ করিয়েছে সমস্ত সময় তাদের পাশে থেকেছে এখনো পর্যন্ত হনুমানজি জীবিত আছে বলে প্রমাণ রয়েছে | রামায়ণের পর হনুমান কোথায় গেল সেই রহস্য জেনে নিন ?
হনুমানজির মহত্বের পরিচয় পাওয়া যায় যখন তিনি রাম সেতু নির্মাণ করেছিলেন পাথরে রাম নাম লিখে লঙ্কা পারাপার এর সম্পূর্ণ রাস্তা নির্মাণ করেছিলেন যার অস্তিত্ব এখনো পর্যন্ত রয়েছে আপনারা চাইলে সেখানে গিয়ে ঘুরে আসতে পারেন | এই হনুমানজি যখন সীতার কাছে গিয়েছিলেন লঙ্কা পুরীতে তখন রাবণ তার লেজে আগুন ধরিয়ে দেওয়াই সমস্ত লঙ্কা পুড়িয়ে ছাই করে দিয়ে এসেছিলেন সেই সময় কিন্তু রাবণ বুঝতে পেরেছিল এই হনুমান তার সাম্রাজ্যের বিনাশ ঘটাতে পারে তবুও অহংকারী রাজা রাবণ ভেবেছিল তিনি রাম কে হারাতে পারবেন এবং অসুর বংশের সম্মান ফিরিয়ে আনতে পারবেন। কিন্তু রাম ছিল স্বয়ং ভগবান বিষ্ণুর তাকে আর কেউ কিভাবে হারাতে পারবে | রামায়ণের পর হনুমান কোথায় গেল সেই রহস্য জেনে নিন ?
আরো একটি ঘটনার সঙ্গে আমি আপনাদেরকে পরিচয় করাতে চাই যখন রামলীলা হয়েছিল হনুমানজিকে লংকায় যাবার পর যখন রাবণের সৈন্যগণেরা হনুমানকে বেঁধে রাবণের সামনে নিয়ে এসেছিল রাবণ তাকে একটি চড় মেরেছিল সেই সময় হনুমানজি যদি একটি চর মারতো তাহলে রামলীলা সেখানেই হয়তো সমাপ্ত হয়ে যেত কিন্তু বিধির বিধান লেখা ছিল রাবণের মৃত্যুর রামের হাতে সমস্ত কিছুই ছিল ভগবানের দ্বারা তৈরি তবে কি করে হনুমান তাকে তখন প্রহার করতে পারত | আপনারা হনুমানজি সমস্ত জীবনী জানলে বুঝতে পারবেন তার অলৌকিক ক্ষমতা এবং তার কঠোর তপস্যা বজ্রের মতো শক্তি যা তাকে শ্রেষ্ঠ রূপে ভক্তদের কাছে উপস্থাপন করেছে শুধু আমাদের পৌরাণিক কাহিনীতে নয় বাস্তবে এখনো পর্যন্ত হনুমানজির নাম ভজন ও হনুমান চল্লিশা পড়লে সেই মানুষের সমস্ত মনো আকাঙ্খা পূরণ হয়েছে বলে শোনা গিয়েছে।
আপনিও যদি হনুমানজীর ভক্ত হয়ে থাকেন তবে অবশ্যই হনুমানজির চল্লিশা প্রতিদিন 108 বার করে পাঠ করুন। দেখবেন আপনার জীবনেও সকল অশান্তি দূরে চলে যাবে আপনার আর্থিক সংকট দূরে চলে যাবে আপনিও নিজেকে এক প্রতিষ্ঠিত রূপে সমাজের সামনে প্রস্তাবন করতে পারবেন শুধুমাত্র অনুমানজির কৃপায় |রামায়ণের পর হনুমান কোথায় গেল সেই রহস্য জেনে নিন ?