১২ ঘণ্টার পর হাওড়া ব্রিজ কেন বন্ধ করে দেওয়া হয় ? এর আসল রহস্যটা কি জেনে নিন ?
হুগলি নদীর তীরে অবস্থিত কলকাতা ও হাওড়াকে সংযোগকারী হাওড়া ব্রিজটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। শুধু তাই নয় এই ব্রিজের নালীর মধ্যে গভীর রহস্য লুকিয়ে আছে। কেননা এই ব্রিজের আসল নাম কি তাকেও জানে না |কিন্তু সকলেই একে হাওড়া ব্রিজ বলে ডাকে শুধু তাই নয় এমনটাও মনে করা হয় যে এই ব্রিজে একটা চাবিও আছে যে চাবি ইংরেজরা আজও পর্যন্ত ভারত সরকারকে দেয়নি | কলকাতার হুগলি নদীর তীরে অবস্থিত হাওড়া ব্রিজ কে নিয়ে অনেক ঘটনা ও কাহিনী বিখ্যাত হয়ে আছে। যার পেছনে লুকিয়ে থাকা আসল সত্যটা হাওড়া জেলায় বসবাসকারী স্থানীয় মানুষ তাও জানে না | তবে আপনারা যদি হাওড়া ব্রিজের পিছনে লুকিয়ে থাকা আসল গভীর রহস্যটা জানতে চান তাহলে এই আর্টিকেলটা পুরো পড়ুন আর জানুন হাওড়া ব্রিজের পিছনে লুকিয়ে থাকা রহস্যটা কারণ আজ এই আর্টিকেলে থাকবে হাওড়া ব্রিজের সাথে জড়িয়ে থাকার রহস্যের পুরো কাহিনী |
হাওড়া ব্রিজের আসল রহস্যটা কি? আর কেন হাওড়া ব্রিজ কে বারোটার পরে বন্ধ করে দেওয়া হয় ? (১২ ঘণ্টার পর হাওড়া ব্রিজ কেন বন্ধ করে দেওয়া হয় ? এর আসল রহস্যটা কি জেনে নিন ?)
আসলে আপনারা যদি ভারতবাসী হন অর্থাৎ যদি আপনি ভারতবর্ষে বসবাস করেন আর আপনি যদি আপনার দাদা ঠাকুর মার কাছ থেকে কোন কাহিনী শুনে থাকেন তাহলে আপনিও হয়তো এই কথাটি কখনো না কখনো শুনে থাকবেন যে যখনই কোন বড় ব্রিজ বা বাস তৈরি করা হয় অথবা কোন নদীর খনন করা হয় তার জীবিত মানুষের বলি দেওয়া হয়। কথায় আছে যে যখনই কিছু বড় জিনিস তৈরি হয় তো কিছু না কিছু বলিদান দিতে হয় কিছু মানুষের প্রাণ বিসর্জন দিতে হয় যার পর থেকেই ওই তৈরি হওয়া জিনিসটাই ঠিকঠাক মজবুত ভাবে খাড়া হয়ে থাকে | আর ঠিক তেমনি হাওড়া ব্রিজ কে নিয়েও এমনই কিছু কথা শোনা যায় | আগেকার মানুষের দ্বারা এই কথাটি প্রচলিত আছে যে হাওড়া ব্রিজের মতই আরো অনেক বড় বড় ব্রিজ তৈরি করার সময় অনেক মানুষের বলি দেওয়া হয়েছিল | কিন্তু আমরা আপনাদের বলে রাখি যে এটা শুধুমাত্র গুজব ছাড়া আর কিছুই নয় কারণ যে কোন কনস্ট্রাকশনে কাজ করার পর বলি দেওয়া কেবলমাত্র একটি অন্ধবিশ্বাস | দীর্ঘ ৭৫ বছর ধরে কলকাতার গর্ভ হয়ে থাকা হাওড়া ব্রিজ বিশ্বযুদ্ধের ও সাক্ষী হয়ে আছে |এই ব্রিজ টি যেমন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় গোলা বারুদের আঘাত সহ্য করেছিল ঠিক তেমনি এটি ভারতকে বিকর্ষিত হতেও দেখেছে | (১২ ঘণ্টার পর হাওড়া ব্রিজ কেন বন্ধ করে দেওয়া হয় ? এর আসল রহস্যটা কি জেনে নিন ?)
হাওড়া ব্রিজের ইতিহাস সম্পর্কে জানুন ?(১২ ঘণ্টার পর হাওড়া ব্রিজ কেন বন্ধ করে দেওয়া হয় ? এর আসল রহস্যটা কি জেনে নিন ?)
তবে বন্ধুরা হাওড়া ব্রিজের ইতিহাস জানার জন্য আমাদের সেই সময়ের ইতিহাস খুঁজতে হবে যখন এই ব্রিজটিকে তৈরি করা হয়েছিল | কিন্তু তার আগে আমরা এটা জেনে নেব যে কেন এই ব্রিজ কে বারোটা বাজার পর বন্ধ করে দেওয়া হয় | আসলে যে সমস্ত ইঞ্জিনিয়াররা এই ব্রিজকে নির্মাণ করেছিল তারাই একে বারোটা বাজার পর বন্ধ করে দিতে বলেছিল | কাজ করতে সক্ষম এমনটাও বলা হয় যে তারা পরিষ্কার সাবধান করে দিয়েছিল যে ঠিক বারোটা বাজলেই ব্রিজ টিকে বন্ধ করে দেবে নয়তো ব্রিজ ভেঙে পড়ে যাবে | তবে এটা কেউ জানে না যে একে দিন বারোটা বাজার পর বন্ধ করতে হবে না রাত বারোটা বাজার পর আর এই কারণে ঘড়িতে ঠিক বারোটা বাজলে তখনই হাওড়া ব্রিজকে কিছুটা সময়ের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়।আর সেটা দিন হোক বা রাত হোক |ঠিক তেমনি প্রথমেই আপনাদেরকে বলেছি হাওড়া ব্রিজের একটি চাবি আছে যেটা ইংরেজরা এখনো পর্যন্ত ভারতকে ফেরত দেয়নি | আসলেই এই চাবী কে নিয়ে এই মানুষরা এমনটা মনে করেন যে এই চাবির সাহায্যে ব্রিজকে খোলা যেতে পারে। অর্থাৎ আমরা এটা বলতে চাইছি যে এই ব্রিজকে এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছিল যে যখন কোন বড় জাহাজ এই ব্রিজের নিচ দিয়ে অতিক্রম করবে তখন যেন একে মাঝখান থেকে খোলা যায় আর জাহাজ চলে যাওয়ার পর পুনরায় যেন ব্রিজ টিকে বন্ধ করে দেওয়া যায় |মানে আমরা আপনারা কেবল এটাই বলতে পারি যে এই ব্রিজটিকে ব্রিটিশরা অত্যন্ত অ্যাডভান্স টেকনোলজির দ্বারা তৈরি করেছিল | যদিও চাবির এই কথাটি কতটা সত্য আজও পর্যন্ত তার কোন উপযুক্ত প্রমাণ পাওয়া যায়নি | তবে যদি এই ব্রিজটির ইতিহাসকে অনুসন্ধান করা যায় তাহলে জানা যায় যে ১৯৪২ সালেএই ব্রিজটির নির্মাণ কার্য সম্পূর্ণ করা হয়েছিল |এবং ১৯৪৩ সালের ৩রা ফেব্রুয়ারি সাধারণ মানুষের জন্য ব্রিজটিকে খুলে দেওয়া হয়েছিল | আপনি জেনে গর্বিত হবেন যে যখনইএই ব্রিজ তৈরি করার কাজ সম্পূর্ণ হয়েছিল তো সেই সময় এই ব্রিজটি পুরো পৃথিবীতে তৃতীয় সবথেকে লম্বা ব্রিজ ছিল | এতক্ষণ তো আপনারা বুঝতেই পেরেছেন যে ইংরেজরা হাওড়া ব্রিজ কে নির্মাণ করেছিল | কিন্তু এর পেছনে লুকিয়ে থাকা কারণ হয়তো আপনারা অনেকেই জানেন না কেননা সেই সময় কলকাতা ও হাওড়ার মধ্যে হুগলি নদীর উপর কোন ব্রিজ ছিল না | মানুষরা এপার থেকে ওপার যাওয়ার জন্য নৌকা ব্যবহার করত | কিন্তু ১৮৭১ সালে হাওড়া ব্রিজ এক পাশ হওয়ার পর ১৮৭৪ সালের হুগলি নদীর উপর ২২ লক্ষ টাকার বাজেটে একটি পিঁপড়ের হুল তৈরি করা হয়েছিল | যদিও ১৯০৬ সালে যখন হাওড়া স্টেশন তৈরি হয়েছিল তখন এই পুল দিয়ে লোকজনের যাতায়াত বন্ধ হয়ে গিয়েছিল ফলে মানুষের যাতে কোনরকম বিপদ না ঘটে সেই জন্য এই পুলকে হাঁটিয়ে দিয়ে একটি ভাসমান সেতু বানানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেই সময় বিশ্বযুদ্ধের দামামা বেজে উঠেছিল সেই জন্য ভাসমানই সেতু বানানোর কাজ শুরু করা হয়নি। কিন্তু ১৯২২ সালে নিউ হাওড়া ব্রিজ কমিশন গঠন করার পর প্রেথওয়েব বান এবং জেসন্স কন্ট্রাকশন কোম্পানিকে এই ব্রিজ বানানোর টেন্ডার দেওয়া হয়েছিল | তবে আপনি এটা জেনে আশ্চর্য হয়ে যাবেন যে এই ব্রিজের নিচে একটি ও পিলার দেখতে পাবেন না তবে আপনি ভাববেন যে কোনো রকম পিলার ছাড়া কিভাবে এই ব্রিজ টি এত বছর ধরে জলের নিচে খাড়া হয়ে আছে | তাহলে আপনাদের বলে রাখি যে এর পেছনের কারণ হলো নদীর দুই কিনারায় ২৮০ ফুট বিশিষ্ট উঁচু এই দুটি পিলার আছে যার ওপর নির্ভর করে ব্রিজটি দীর্ঘ ৭৫ বছর ধরে খাড়া হয়ে আছে | এমনটাও বলা হয় যে এই ব্রিজ কে বানানোর সময় ইংরেজরা এমন করা ইন্সট্রাকশন দিয়েছিল যে আপনারা এই ব্রিজ টিকে যেমন খুশি তেমন ভাবে নির্মাণ করুন কিন্তু এই ব্রিজের নিচে যেন কোন প্রকার পিলার না থাকে যাতে ব্রিজের নিচে দিয়ে যাওয়া আশা করা নৌকা আরোহীর যেন কোনো প্রকার অসুবিধা না হয় হয়তো এই কারণে পুরো হাওড়া ব্রিজটির নদীর দুই কিনারায় ২৮০ ফুট উচ্চতা বিশিষ্ট দুটি পিলারের উপরে ভর করে দাঁড়িয়ে আছে | দুটি পিলারের মধ্যে দূরত্ব ১০০৫০০ ফুট শুধু তাই নয় এই ব্রিজকে নিয়ে এর থেকেও বেশি আশ্চর্যএর কথা হল এটা যে এই ব্রিজকে তৈরি করার সময় স্টিলের প্লেটকে জোড়া লাগানোর জন্য নাট বল্টু এর ব্যবহার না করে মেটেল দিয়ে তৈরি হওয়া পেরেকের ব্যবহার করা হয়েছিল | তাই এত বড় ব্রিজের একটাও নাট বল্টুর ব্যবহার না করা সত্যিই অবাক করার বিষয় এছাড়াও আপনাদের বলে রাখি যে এই ব্রিজকে নির্মাণ করতে ২৬০০০৫০০ টন স্টিলের ব্যবহার করা হয়েছিল | আর এই ২৬ হাজার ৫০০ টন স্টিলের মধ্যে প্রায় ২৩ হাজার ৫০০ টন স্টিলের সাপ্লাই একা টাটা স্টিল করেছিল। তাই একথা আমরা বলতেই পারি যে হাওড়া ব্রিজ নির্মাণে টাটা স্টিল কোম্পানির অনেক বড় ভূমিকা আছে।
এই সমস্ত কিছু জানার পর হয়তো আপনাদের অনেকের মস্তিষ্কে এই প্রশ্নও জাগতে পারে যে আজো কি হাওড়া ব্রিজ সম্পূর্ণভাবে মজবুত আছে তাহলে এর উত্তর হয়তো নাও হতে পারে। আর এর জন্য আমার আপনার মত মানুষ রাই দায়ী | আসলে পশ্চিমবঙ্গের লোক পান খেতে ভীষণ ভালোবাসে | ২০১১ সালে একটি রিপোর্ট অনুযায়ী পান ও নানারকম ভূটকার সেভ ফেলার কারণে এই ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে যাচ্ছে |কারণ যে দুটি পিলারের উপরে এই ব্রিজটি টিকে আছে তাদের কিছুটা অংশ বিগত কয়েক বছরে অর্ধেক হয়ে গেছে |যার ফলে এই রিপোর্ট সামনে আসার পর ব্রিজ টিকে বাঁচানোর জন্য স্টিলের পায়ার নিচে ফাইবার গ্লাস দিয়ে পায়া গুলোকে ঢেকে দেওয়া হয়েছে | যেটা করতে প্রায় কুড়ি লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে | যদিও মানুষ ছাড়াও পাখিদের কারণেও ব্রিজটির ওপর আঘাত পড়ছে | কেননা আপনারা যদি কোন সময় হাওড়া ব্রিজে যান তাহলে দেখবেন যে পাখিরাও এই ব্রিজের ওপর নিজেদের বসতি গড়ে তুলেছে এবং তারা প্রতি নিয়ত ব্রিজের ওপর মলমূত্র ত্যাগকরার ফলে ব্রিজের কেমিক্যাল ঘারতি হচ্ছে |তাই এই ব্রিজকে বাঁচাতে গেলে ব্রিজের ওপরথেকে পাখিদের মলমূত্র পরিষ্কার করার জন্য রাজ্য সরকার প্রতি বছর ৫ লক্ষ টাকা খরচ করে |সেই সাথে ব্রিজকে জং পড়ার হাত থেকে বাঁচানোর জন্য নির্দিষ্ট সময়ে সময়ে প্রেন্ট করা হয় | আর এই ব্রিজ কে পুরো প্রেন্ট করতে প্রায় ৬৫ লক্ষ টাকা খরচ করা হয় | তবে আপনাদের বলিহাওড়া ব্রিজশুধু কেবলমাত্র সেই সময়ের নয় আজও হাওড়া ব্রিজ ভারতের গর্ব |তবে যদি এই ব্রিজের নামের কথা বলা হয় তাহলে আপনাদের বলি যে ১৯৬৫ সালের ১৪ই জুন কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নামে এই ব্রিজটির নাম রবীন্দ্র সেতু করা হয়েছিল কিন্তু মানুষের মধ্যে আজও এটি হাওড়া ব্রিজ নামেই পরিচিত হয়ে আছে | এছাড়াও এই ব্রীজটি নির্মাণ করতে প্রায় ২.২ মিলিয়ন ডলার খরচ হয়েছিল আর এই ব্রিজটির মোট দৈর্ঘ্য হল ১০০০৫২৮ ফুট এবং প্রস্থ ৬২ ফুট | আর এই হল হাওড়া ব্রিজের সম্বন্ধে অজানা তথ্য ওগভীর রহস্য |(১২ ঘণ্টার পর হাওড়া ব্রিজ কেন বন্ধ করে দেওয়া হয় ? এর আসল রহস্যটা কি জেনে নিন ?)