শিব পার্বতীর বিয়ে কিভাবে হয়েছিল?

 

শিব পার্বতীর বিয়ে কিভাবে হয়েছিল?

শিব পার্বতীর বিয়ে কিভাবে হয়েছিল?
শিব পার্বতীর বিয়ে কিভাবে হয়েছিল?

 

 শিব পার্বতীর প্রেমের গল্প শুনলে  আপনারা বুঝতে পারবেন একজন প্রেমিকা, তার প্রেমিকের প্রতি এবং একজন প্রেমিক তার প্রেমিকার প্রতি কতটা ভালোবাসা থাকলে জন্ম জন্মান্তর একসাথে থাকতে পারে | সত্তিকারের প্রেমিক হলেন মহাদেব আর প্রেমিকা হলেন মা পার্বতী | তাদের প্রেম পর্ব থেকে বিবাহ পর্যন্ত সম্পূর্ণ কাহিনী আজকের এই আর্টিকেলে তুলে ধরব |শিব পার্বতীর বিয়ে কিভাবে হয়েছিল?

শিব পার্বতীর প্রেম কাহিনী সম্পর্কে জানুন ?

 মাতা পারবতি দিনরাত সবকিছু ছেড়ে দিয়ে শুধু শিবের চিন্তা করতে লাগলেন |  শিব তার মনে এক্কেবারে গেঁথে গেলেন ব্যাকুল হয়ে উঠলেন মা পার্বতী শিবের নেশায়। তখন দেবশ্রী নারদ এসে মাতা পার্বতীকে বললেন শিব কেবলমাত্র তপস্যাতেই সন্তুষ্ট হন। তপস্যা বীণা ব্রহ্মা-বিষ্ণু এমন কি কোন দেবতাই শিবের দর্শন পায় না | নারদের পরামর্শ মত পার্বতী শিবের তপস্যা করার সিদ্ধান্ত নিলেন | আজ হিমালয় এবং মাতা মেনোকার অনুমতি নিয়ে বহুমূলক বস্ত্র অলংকার আদি পরিত্যাগ করে। মৃগো চর্ম পরিধান করলেন এবং হিমালয়ের গৌরীশেখর নামক চূড়ায় গিয়ে কঠিন তপস্যায় বসলেন | শিব পার্বতীর বিয়ে কিভাবে হয়েছিল?

 বর্ষাকালে মাটিতে বসে এবং শীতকালে জলে দাঁড়িয়ে তপস্যা করতে লাগলেন মাতা পার্বতী। বন্যজন তোরা তার ক্ষতি করা তো দূরে থাক তার কাছে ঘেষতে ও ভয় পেতে লাগলো | সকল দেবতা ও ঋষিগণ একত্রিত হয়েই  অর্তসহ্য তপস্যা ও চাক্ষুষ করতে লাগলেন |এরপর দেবগন ও ঋষিগণ শিবের কাছে প্রার্থনা জানিয়ে বললেন হে প্রভু মাতা পার্বতীর এহেনুর কঠিন তপস্যা আপনি লক্ষ্য করেননি |এমন কঠিন তপস্যা পূর্বে কেউ করেননি। আর ভবিষ্যতেও করতে পারবে না আপনি অনুগ্রহ করে তার মনস্ক কামনা পূর্ণ করুন। শিব তখন এক বৃদ্ধ ব্রাহ্মণের ছদ্মবেশে পার্বতীর কাছে গেলেন পার্বতীকে পরীক্ষা করার জন্য | বৃদ্ধ ব্রাহ্মণ কে দেখে মাথা পার্বতীর ফল ফুল দিয়ে তার পূজা করলেন।শিব পার্বতীর বিয়ে কিভাবে হয়েছিল?

ছদ্দবেশী শিব জিজ্ঞাসা করলেন তুমি তপস্যা করছ কেন ? তুমি কি চাও ? 

পার্বতী বললেন আমি শিবকে স্বামী রূপে পেতে চাই | ব্রাহ্মণ বেশে শিব তখন বললেন তুমি তো দেখি মহা মূর্খ তুমি হীরের বদলে কাঁচ আর চন্দনের বদলে কাঁদা চাও | গঙ্গাজল ছেড়ে, কেউ কি কুপের জল পান করে | বিবাহ যদি করতে হয় তাহলে স্বর্গের দেবতাদের কর,দেবরাজ ইন্দ্রজিৎই  তোমার উপযুক্ত স্বামী হতে পারেন |  শিব আবার একটা দেবতা নাকি তিনটি চোখ মাথায় জটা গায়ে ভস গলায় সাপ ভূত-প্রেত নিয়ে থাকে পরনে কাপড় নেই থাকার ঘর নেই শ্মশানে শ্মশানে পড়ে থাকে গাজা ভাঙ খায় এমনকি কে যে তার মা বাবা কেউ তা জানে না আমার মতে তুমি ভুল করছ। শিবকে ভুলে যাও নিজের জীবন নষ্ট করো না | ব্রাহ্মণের কথা শুনে পার্বতী রেগে উঠে বললেন আপনার মত শিবনিন্দুকে সেবা করলাম ভিক আমাকে শিবের বারেমে আর একটি শব্দ উচ্চারণের আগেই আমি এখান থেকে চলে যেতে চাই | আপনি হয়তো ভুলে গেছেন শিব নিন্দা যে করে আর শিব নিন্দা যে শোভন করে তার আর কখনো মৃত্যু লাভ হয় না | আমি শিব নিন্দা একটি শব্দ শুনতে চাই না বলে পার্বতী সেই স্থান পরিত্যাগ করতে যাবেন এমন সময় শিব সম্মুর্তি ধারণ করে পার্বতীকে টেনে ধরলেন আর কি বর চান তা জানতে চাইলেন |শিবও স্পর্শে আত্মহারা অভিভূত পার্বতী বললেন প্রভু আমি আপনাকে আমার স্বামী রূপে পেতে চাই আমাকে বিবাহ করুন |শিব হেসে বললেন তথাস্তু | শিব পার্বতীর বিয়ে কিভাবে হয়েছিল?

 এবার জেনে নিন কিভাবে শিব পার্বতীর বিয়ে হয়েছিল ?

এরপর শিব সপ্ত ঋষিকে দুধ বানিয়ে গিরিরাজ হিমালয়ের কাছে শিব পার্বতীর বিবাহ প্রস্তাব নিয়ে গেলে তারা রাজি হয়ে যান | বিবাহের দিন দেব দেবীর বরযাত্রী সহজ হিমালয়ের প্রাসাদের কাছে পৌঁছাতেই মেনোকা অর্থাৎ পার্বতীর মা বেরিয়ে এলেন বলল কই শিব দেখি আমার জামাই কেমন দেখতে যাকে পেতে আমার মেয়ে এত কঠোর তপস্যা করল সে নিশ্চয়ই পরম সুন্দর | প্রথমেই মেনোকা দেখলেন গন্ধবরাজ বিশ্ববসুকে |বিশ্ব বসু ছিলেন সুদর্শন পুরুষ মেনকা ভাবলেন ইনিশিপ কিন্তু প্রশ্ন করে জানলেন উনি শিব নয় বিয়েতে গান গাইতে এসেছেন। এরপর মেনকা  সম্পদের দেবতা কুবের কে দেখলেন | কুবের বিশ্ব বসু অপেক্ষা সুদর্শন কিন্তু নারদ মেনকা কে বললেন যে উনি শিব নন | তারপর মেনকা একে একে দেখলেন বরুন, জম, ইন্দ্র, সূর্য, চন্দ্র, ব্রহ্মা, বৃহস্পতিকে প্রত্যেকের সুদর্শন পুরুষ কিন্তু নারদ মেন কাকে বললেন এরা কেউ শিব নন শিবের অনুচর মাত্র |শুনে মেনোকার আনন্দ আর ধরে না এমন সুদর্শন দেবতারা যদি শিবের অনুচর মাত্র হন তবে শিব নিজে কতনা সুদর্শন কিন্তু কোথায় শিব |শেষে এলেন শিব নারদ মেনোকাকে বললেন ইনি শিব জামাইয়ের অমন ভীষণ মূর্তি দেখে মেনকা তো মুরছা গেলেন। জ্ঞান ফিরতেই তিনি স্বামী হিমালয় এবং কন্যা পার্বতী ও নারদকে এমন প্রাপ্ত নির্বাচনের জন্য তিরস্কার করতে লাগলেন ব্রহ্মা ও অন্যান্য দেবতারা মেনোকা কে সানতো করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হলেন মেনোকা বললেন আমি এমন শিবের সাথে মেয়ের বিয়ে দেব না | পার্বতীর বিয়ে আমি অন্য কারোর সাথে দেব পার্বতী ও বেঁকে বসলেন বললেন আমিও শিব ছাড়া কাউকে বিবাহ করতে পারব না | শৃগাল কখনো সিংহের বিকল্প হতে পারে না | মেনকাও কিছুতেই মানতে নারাজ | শেষে নারদ শিবকে মনোহর রূপ ধারণ করার অনুরোধ করলেন | শাশুড়িকে শান্ত করতে শিবকে তাই করতে হলো। শিবের শরীর সহস্র সূর্যের প্রভাত ময় হল মস্তকে শোভা পেল দৈব্য মুকুট অঙ্গ আবৃত হলো গ্রহ মূল্য বস্ত্রে | শিবের সেই মনোহর রূপ দেখে সবাই মোহিত হলেন এমনকি মেনোকাও | নিজের নির্বুদ্ধিতার জন্য ক্ষমা চাইলেন মেনোকা | শিব পার্বতীর বিবাহের তার আর কোন আপত্তি রইল না | ব্রহ্মার  পৌরহিত্যে শিব ও পার্বতীর বিবাহ সম্পন্ন হল | এবারে  শিব পার্বতীকে নিয়ে কৈলাসে ফিরলেন।শিব পার্বতীর বিয়ে কিভাবে হয়েছিল?

এবার বোঝা গেল সত্যি কারের ভালোবাসা কাকে বলে | শিবের উপাসনা করবেন দেখবেন বাবা ভোলানাথের কৃপায় আপনার সব বাধা দূর হয়ে গেছে | হার হার মহাদেব |শিব পার্বতীর বিয়ে কিভাবে হয়েছিল? 

 

Prokash Durlov

আমার নাম প্রকাশ করলাম আমি একজন প্রফেশনাল ব্লগার | ব্লগিং করি এবং ব্লগিং থেকে যেটুকু অর্থ উপার্জন করি সেটুকু আমার সংসারের কাজকর | আমি ২০১৩ সাল থেকে ব্লগিং করছি ব্লগিং ক্যারিয়ারে অনেক ওঠানামা হয়েছে তবুও আমি ব্লক থেকে ছাড়িনি আজও পর্যন্ত ইন্টারনেটের মাধ্যমে সমস্ত ধরনের ইনফরমেশন দর্শকের সামনে তুলে ধরছি |

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন

GP Global