হনুমানজী কেন শ্রীরামের জন্য গোবর্ধন পর্বত তুলেছিল ? Why did Hanumanji lift Govardhana Parbat for Sriram?

হনুমানজী কেন শ্রীরামের জন্য গোবর্ধন পর্বত তুলেছিল ?

 


হনুমানজী কেন শ্রীরামের জন্য গোবর্ধন পর্বত তুলেছিল ? Why did Hanumanji lift Govardhana Parbat for Sriram: সীতা মাতাকে যখন রাবণ হরণ করে নিয়ে গিয়েছিল শ্রীরাম তখন লঙ্কায় যাবার জন্য হনুমানের সাথে তার অনেক ভালো সেনাকে নিয়ে লঙ্কায় যাবার জন্য রাম সেতু নির্মাণ করেছিল, আর রাম সেতু নির্মাণ করবার জন্য বানরেরা ছোট ছোট পাথর সমুদ্রে নিক্ষেপ করছিল তখন তাদের মধ্যে অনেকেই নিজেদের মধ্যে বলতে থাকে আমরা কেন এত ছোট ছোট পাথর দিয়ে সেতু নির্মাণ করছি। আমরা তো বড় বড় পাথরও ব্যবহার করতে পারি, একথা শুনেই হনুমানজি, তৎক্ষণাৎ সেই জায়গা থেকে প্রস্থান করলো গোবর্ধন পর্বতের কাছে এবং গোবর্ধন পর্বত ছিল এমন এক মায়াবী অভিশপ্ত পর্বত যাকে কেউ স্পর্শ করলে সে পাথরে পরিণত হবে |

 

এমন অবস্থায় যখন হনুমান গোবর্ধন পর্বতকে স্পর্শ করল তখন তিনিও ধীরে ধীরে পাথরে পরিণত হতে থাকলো গোবর্ধন পর্বত তখন হনুমান কে বলল কে তুমি? তোমার এত বড় সাহস যে তুমি আমার স্পর্শ করছো হনুমান বলল আমি রাম ভক্ত হনুমান আমি চাইলে আপনার এই মায়া ভেঙে আপনাকে নিয়ে যেতে পারি কিন্তু হে প্রভু আমি আপনাকে অনুরোধ করছি আপনি আমার সাথে চলুন আমি সিরামের জন্য সেতু নির্মাণ করছি যে,গোবর্ধন পর্বত তখন হনুমানকে বলে আমি যেতে পারি একটা শর্তে প্রভু শ্রী রাম যদি একবারের জন্যও আমাকে স্পর্শ করে তবে আমি কিন্তু তোমার সঙ্গে যেতে প্রস্তুত হনুমান বলল হ্যাঁ আপনার যা আদেশ তাই হবে প্রভু শ্রী রাম আপনাকে অবশ্যই স্পর্শ করবে, এ কথা বলে হনুমান পরবর্তী হাতে তুলে নিল এবং শ্রীরাম এর কাছে যেতে লাগলো পথে যেতে যেতে হনুমান দেখলো যে রাম সেতু বানানোর কাজ সম্পন্ন হয়ে গেছে তাই তখন মথুরার এক স্থানে গোবর্ধন পর্বত কে রেখে তিনি চলে গেলেন রামের কাছে | গোবর্ধন পর্বত কে তখন হনুমান বললেন আপনি চিন্তা করবেন না শ্রীরাম আপনার কাছে অবশ্যই আসবে এবং আপনাকে স্পর্শ করবে। এটা আমার আপনার কাছে কথা দেওয়া থাকলো | 

 

পরবর্তীকালে যখন কলিযুগের সূচনা হয় শ্রীরাম যখন আবার শ্রীকৃষ্ণ রূপে জন্মগ্রহণ করেন তখন আমরা সকলেই ছোটবেলায় সিনেমাতে ও বিভিন্ন গ্রন্থে দেখেছি শ্রীকৃষ্ণের শ্রীকৃষ্ণের কত লীলা ছিল সেই লীলার মধ্যে একটি লীলা হল এই গোবর্ধন পর্বত কে তিনি তার এক আঙুলের সাহায্যে ওপরে উঠিয়ে রেখেছিল রাজ্যবাসীকে ঝড়-বৃষ্টি তান্ডবের হাত থেকে রক্ষা করবার জন্য এই ছিল সেই গোবর্ধন পর্বতকে হনুমানের দেওয়া বচনের সুফল আর শ্রীকৃষ্ণের ছোঁয়াতে গোবর্ধন পর্বতের উপর যে অভিশাপ লেগেছিল তা সমাপ্ত হয়ে যায় এবং তিনি পরবর্তীতে মানুষ রূপে শ্রীকৃষ্ণ কে ধন্যবাদ জানাই এবং তিনি বলেন আমি দীর্ঘদিন এক অভিশাপে লিপ্ত হয়েছিলাম আপনার ছয়টা সমাপ্ত হলো ধন্যবাদ প্রভু আপনার দর্শন পাওয়ার জন্য | 

 

কেন গোবর্ধন পর্বত সত্য ঋষির দ্বারা অভিশাপিত ?

কি জন্য আমরা অন্নকুট করে থাকি,গোবর্ধন পূজোর দিন ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্য ৫৬ ধরনের ভোগ প্রস্তুত করা হয় কারণ সাত দিন ভগবান শ্রীকৃষ্ণ নিজে হাতে পর্বত তুলেছিলেন আর এজন্য তিনি সে সময় কিছুই খেতে পারিনি | মা যশোদা ঐদিনই শ্রীকৃষ্ণকে আট পণ্য দিয়েছিলেন বলে বিশ্বাস করা হয় হিন্দু ধর্মে, এ কারণে শ্রীকৃষ্ণ যখন সপ্তম দিনের শেষে পাহাড় স্থাপন করেছিলেন তখন গ্রামবাসীরা প্রত্যেকে আধঘন্টা অনুসারে ৫৬ ধরনের খাবার প্রস্তুত করেছিলেন এবং শ্রীকৃষ্ণকে খাওয়াইছিলেন সেই দিন থেকেই অন্নকুট পালন করা হয় |এই দিনেই গোবর থেকে গোবর্ধন পর্বতের আকৃতি তৈরি করা হয় এবং শ্রীকৃষ্ণ ও গোবর্ধন এর পূজা শুরু করা হয়, ধর্মীয় বিষয়গুলি অনুসরণ করে একদিন এই বিশাল উচ্চতার আকারে সূর্য দেখা যেতনা আজ এর আকার দৈনন্দিক কম হয়ে গেছে। বিভিন্ন গ্রন্থ অনুসারে শোনা গিয়েছে এই পর্বতের আকার পাঁচ হাজার বছর আগে এই পর্বতের আকার প্রায় ৩০ হাজার মিটার ছিল কিন্তু বর্তমানে এই পাহাড়ের উচ্চতা শুধুমাত্র ২৫ থেকে ৩০ মিটার। ধারণা করা হয় কোন ঋষির অভিশাপে এই পাহাড়ের উচ্চতা রহস্য কমতে চলেছে, তবে খুবই কম মানুষ জানে এই পর্বত সত্য ঋষির অভিশাপে এই পর্বতের উচ্চতা দিন দিন কমে যাচ্ছে | 

 

গোবর্ধন পর্বতের উচ্চতা দিন দিন কমছে কেন ?

গোবর্ধন পর্বত কেন ঋষি দ্বারা স্রাপিত: প্রকৃতপক্ষে দ্বাপর যুগে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ এই পর্বতে অনেক লীলা করেছেন আর একবার ইন্দ্র দেবের অভিমান হয়েছিল। তারপর লীলাধারী শ্রীকৃষ্ণ একটি লীলা করেছিলেন, একদিন শ্রীকৃষ্ণ দেখলেন সমগ্র ব্রজবাসীরা নানা ধরনের খাবার তৈরি করছেন একই সঙ্গে পূজা মন্ডপ সাজানো হচ্ছে আর সকাল থেকেই সকলে পূজা মন্ডপের উপকরণে ব্যস্ত সবাই। আর তখন শ্রীকৃষ্ণ যশোদামাকে জিজ্ঞাসা করলেন মা, কার পুজোর জন্য এই সমস্ত মানুষেরা এত প্রস্তুতি নিচ্ছেন ? যশোদা মা তখন শ্রীকৃষ্ণ কে বলল ব্রজবাসীরা ইন্দ্র দেবের পূজার জন্য এই প্রস্তুতি নিচ্ছেন তখন নীলাধারী শ্রীকৃষ্ণ বললেন কেন সবাই ইন্দ্র দেবের পূজা করছেন যশোদা মা তখন বললেন – কারণ ইন্দ্র দেবের কারণেই বৃষ্টি হয় আর তার আশীর্বাদ এর ফলে সকলের ফসল ভালো হয় আর আমাদের গরু চরণ হয়, তখন শ্রীকৃষ্ণ বললেন বৃষ্টি দেওয়া ইন্দ্র দেবের কর্তব্য আমাদের যদি সত্যিকারের কাউকে পূজা দিতে হয় তবে আমরা গোবর্ধন পর্বত কে পুজো করবো। 

শ্রীকৃষ্ণ তখন বলল আমরা গোবর্ধন পর্বত থেকে ফল ফুল শাকসবজি ইত্যাদি পায় এবং আমাদের গরু সেখানে চড়ে তবে আমাদের উচিত গোবর্ধন পর্বত কে পূজা দেওয়া এরপরে সমস্ত ব্রজবাসী ভগবান ইন্দের পরিবর্তে গোবর্ধন পর্বতকে পুজো করা শুরু করল। সেই সময় ইন্দ্র দেব এটাকে তার অপমান বলে মনে করলেন। আর এই অপমানের প্রতিশোধ নিতে তিনি প্রবল বর্ধন শুরু করলেন যার কারণে আর্তনাদ শুরু হয় সবাই তাদের পরিবার প্রিয়জন ও পশু-প্রাণীদের বাঁচাতে এদিক-ওদিক ছুটতে লাগলেন তখন ব্রজবাসী এই সমস্ত কারণ হিসেবে শ্রীকৃষ্ণকে বললেন শ্রীকৃষ্ণের অনুগত্যের জন্যই আজকে আমাদের এই পরিণতি। তাই ভগবান শ্রীকৃষ্ণ সমস্ত ব্রজবাসীকে রক্ষা করতে এবং ইন্দ্রের অহংকার ভাঙতে সমস্ত বোজবাসী রক্ষার্থে তিনি গোবর্ধন পর্বত কে নিজের আঙ্গুলের ওপর তুলে ধরেন। সেই সময় সমস্ত গুজবাসী সেই গোবর্ধন পর্বতের নিচে আশ্রয় নিল এরপর ইন্দ্র দেব তার নিজের ভুল বুঝতে পেরে শ্রীকৃষ্ণের কাছে ক্ষমা চাই এরপর থেকেই শুরু হয় গোবর্ধন পর্বতের পূজা পাঠ | এবার আপনারা অবশ্যই ভাবছেন যে এমন শ্রদ্ধেয় পর্বত কে কেন কে অভিশাপ দেবে ?

গোবর্ধন পর্বত কে কে অভিশাপ দেন ?

এক কিংবদন্তি কথা অনুসারে প্রাচীনকালে তীর্থযাত্রা সময় সত্য মুনি নামক এক কৃষি গোবর্ধন পর্বতের কাছে পৌঁছেছিলেন এবং এই পর্বতের সৌন্দর্যে তিনি মুগ্ধ হয়েছিলেন তারপর সেই মনি দোনাচার্য পর্বত কে অনুরোধ করলেন আপনার পুত্র গোবর্ধন পর্বতকে আমার হাতে দিন, আমি গোবর্ধন পর্বতকে কাশিতে স্থাপন করব, আর সেখানে আমি তাকে পূজা করব এ কথা শুনে দোনোজন দুঃখ পেলেন এবং গোবর্ধন পর্বত কাকে বলল আমি আপনার সাথে যেতে প্রস্তুত তবে আমার একটি শর্ত আছে আপনি আমাকে যেখানে রাখবেন সেখানে আমি বসতি করব তখন সত্য ঋষি গোবর্ধন পর্বতের এ কথা মেনে নিলেন | তখন গোবর্ধন পর্বত সত্য মুনিকে বললেন আমি দুজন উঁচু এবং ৫ যোজন চওড়া আপনি আমাকে কাশিতে কিভাবে নিয়ে যাবেন তখন সত্য মনি তাকে বললেন আমি আমার তপবলে আমার হাতের তালুতে তোমাকে নিয়ে যাব, তারপর গোবর্ধন পর্ব কৃষির সাথে চলতে রাজি হলেন, তারপর ব্রজ এলো তাকে দেখে গোবর্ধন পর্বত ভাবতে লাগলেন ভগবান শ্রীকৃষ্ণ রাধাসহ বিভিন্ন সখীদের সঙ্গে এখানে এসে লীলা করবেন। তখন তার মাথায় চিন্তা এলো এখানে আমাকে থামতে হবে। এই ভেবে গোবর্ধন পর্বত ঋষির হাতে আরো ভারী হয়ে এলো যার ফলে মনি ঋষি সেখানে বিশ্রামের প্রয়োজন হল এবং ঋষি সত্য ব্রজে এসে গোবর্ধন পর্বতকে রেখে বিশ্রাম নিতে লাগলো ক্লান্তির চোটে ঋষি সত্য ভুলে গিয়েছিলেন তিনি গোবর্ধন পর্বতকে কোথাও রাখবেনা যদি গোবর্ধন পর্বত কে সেখানে রাখে তবে সেখানেই সে থেকে যাবে তো ঋষি সেই ভুলটাই করেছিল তখন গোবর্ধন পর্বত ঋষিকে বলেছিল ঋষি। আমি আর কোথাও যেতে পারবোনা আপনার সঙ্গে। আমি আগেও আপনাকে বলেছি আপনি আমায় যেখানে রাখবেন আমি সেখানেই প্রতিষ্ঠিত হয়ে যাব। ঋষি তাকে বারবার অনুরোধ করতে লাগলো যে তার সঙ্গে যাবার জন্য তবে গোবর্ধন কাকে বলল আমি আগেই আপনাকে বলেছিলাম আপনি যেখানেই আমাকে রাখবেন আমি সেখানেই বসতি করব , তখন সত্য ঈসি তাকে অভিশাপ দিলেন তুমি আমার ইচ্ছা পূরণ করলে না তাই ধীরে ধীরে তোমার আকার লুপ্ত হতে থাকবে এমন দিন আসবে তুমি সমতলে মিশে যাবে তাই ধীরে ধীরে আজও সত্য মনির অভিশাপে গোবর্ধন পর্বত এর উচ্চতা হাস পাচ্ছে।

Prokash Durlov

আমার নাম প্রকাশ করলাম আমি একজন প্রফেশনাল ব্লগার | ব্লগিং করি এবং ব্লগিং থেকে যেটুকু অর্থ উপার্জন করি সেটুকু আমার সংসারের কাজকর | আমি ২০১৩ সাল থেকে ব্লগিং করছি ব্লগিং ক্যারিয়ারে অনেক ওঠানামা হয়েছে তবুও আমি ব্লক থেকে ছাড়িনি আজও পর্যন্ত ইন্টারনেটের মাধ্যমে সমস্ত ধরনের ইনফরমেশন দর্শকের সামনে তুলে ধরছি |

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন

GP Global