টাটা টেকনোলজি আসলে কি ? কিভাবে টাটা কোম্পানিটির উৎপত্তি হয়েছে ?

টাটা টেকনোলজি আসলে কি ? কিভাবে টাটা কোম্পানিটির উৎপত্তি হয়েছে ?

টাটা টেকনোলজি আসলে কি ? কিভাবে টাটা কোম্পানিটির উৎপত্তি হয়েছে ?


নিজের স্বপ্নকে পূরণ করার জন্য গুজরাটের একটা ছোট্ট শহর থেকে বাবার হাত ধরে মুম্বাই চলে আসেন জামশেদজি টাটা যাকে আজ Fathers of Indian Industry বলা হয়। আজ সারা বিশ্বে প্রায় একশো টাকারও বেশি দেশে ১৫০ টারাও বেশি কোম্পানি টাটা কোম্পানির প্রোডাক্ট তৈরি করছে যা বিশ্বে ৭০০ মিলিয়নেরও বেশি মানুষ সেটাকে ব্যবহার করছে। খাবার লবণ থেকে শুরু করে বাড়ি তৈরীর রড, গাড়ি থেকে শুরু করে শরীরের পোশাক আজ সবকিছুই মানুষের প্রয়োজনীয় এমন কিছু জিনিস নেই যা টাটা কোম্পানি এখনো পর্যন্ত তৈরি করেনি তবে টাটার এই বিশাল সাম্রাজ্য ২/১ বছরের মধ্যে তৈরি হয়নি এই কোম্পানিটি আজ এই জায়গায় আসতে প্রায় ২০০ বছর সময় লেগেছে যেমন শ্লোকে আছে পরিশ্রম ছাড়া কোন কিছুই সক্ষম হয় না তাই আজকের এই আর্টিকেলটা আমি তাদের জন্য লিখছি যারা মনের মধ্যে কিছু করার ইচ্ছা রাখে ।

 

কিভাবে টাটা কোম্পানিটির উৎপত্তি হয়েছে ? টাটা কোম্পানির সৃষ্টির ইতিহাস ?

আজ থেকে প্রায় ২০০ বছর আগে ১৮২২ সালে গুজরাটের নাসারী নামক একটা ছোট্ট শহরে পারসিক পৃষ্ঠের পরিবারে নোসারজি টাটার জন্ম হয় ছোটবেলা থেকে এই ব্যক্তির মধ্যে কিছু করে দেখানোর মতো ক্ষমতা ছিল। তার এই ইচ্ছেকেই পূরণ করার জন্য মাত্র কুড়ি বছর বয়সে তিনিতার পিতার সাথে সকলে মিলে মুম্বাই শহরে চলে আসে সেই সময় অল্প বয়সে বিয়ে হওয়ার জন্য তার স্ত্রী এবং একটি ছেলেও ছিল। তার এই ছোট্ট ছেলেটার নাম ছিল জামশেদজি টাটা ৩ মার্চ ১৮৩৯ সালে তার জন্ম হয় এবং তার চোদ্দ বছর বয়স হলে তিনি তার পিতার সাথে তুলোর ব্যবসায় যোগ দেন, মুম্বাই আসার পর নোস্যারজি টাটা ধীরে ধীরে বড় হচ্ছিল আর তখন নোসারজি টাটা তার পুত্র জামশেদ টাটাকে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করতে চেয়েছিল তাই সেই সময় জামসেদজিকে এলফিস্টোন কলেজে ভর্তি করে দেন ।  কলেজে পড়ার সময় জামসেরজি টাটা হীরাবাই নামক এক মেয়েকে বিয়ে করেন এবং ১৯৫৮ সালে গ্রিস কলার বা গ্র্যাজুয়েট ডিগ্রী পাস করেন তারপর থেকে তিনি তার বাবার ব্যবসার সাথে পুরোপুরি যোগ দিয়ে দেন । তখন টানা ২৯ বছর বয়স পর্যন্ত তিনি তার বাবার ব্যবসা সামলান কিন্তু তার মনের মধ্যে স্বপ্ন ছিল অনেক বড় । 

 

তার সেই স্বপ্নকে পূরণ করার জন্য তিনি তার জমানো একুশ হাজার টাকা নিয়ে একটি ট্রেডিং কোম্পানি চালু করেন আর সেখান থেকে এই ভারতের ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায় সৃষ্টি হয়। ইংরেজরা সবেমাত্র ১৮৫৭ সালের মহাবিদ্রোহ অতিক্রম করেছে এর মাত্র ১০ বছর পর ১৮৬৮ সালে একটা বন্ধ হওয়া তেলের কারখানাকে নিয়ে তিনি একটা তুলোর কারখানা বানিয়ে দেন আলেকজান্ডার মিল । এর ঠিক দুই বছর পর এই মিলটিকে তিনি বিক্রি করে দেন এবং অনেক টাকা লাভ করেন এবং তারপর ঠিক ১৮৭৪ সালে নাগপুরে তিনি আবার নতুন করে তুলোর কারখানা তৈরি করেন এই সময় ইংল্যান্ডের মহারানী ভিক্টোরিয়া ভারতের সাম্রাজ্ঞী উপাধিপাই সেই সময়েই জামসেটজি সেই মিলটির নাম রাখে Empress Mill এই কোম্পানিটি ছিল তার তৈরি প্রথম বড় কোম্পানি সেই সময় কটন মিল মুম্বাই হওয়ার জন্য মুম্বাইকে টেক্সটাইল নগর বলা হত। জামসেদজি যখন মুম্বাই কে ছেড়ে নাগপুরে তার কোম্পানি তৈরি করার কথা সিদ্ধান্ত করে তখন সবার কাছে এইটা তার এক বোকামি বলেই মনে হয় ।  সেই সময় কেউই এই কোম্পানির উপর ইনভেস্ট করতে চাইছিল না কিন্তু জামসেদ যে চিন্তা ভাবনা অন্যদের থেকে প্রায় অনেকটাই আলাদা ছিল ।  সাধারণত তিনটি কারণে তিনি নাগপুর কে বেছে নিয়েছিলেন তার কোম্পানি গঠন করার জন্য-

1.     এখানে আশেপাশে কার্পাসের উৎপাদন ভালো হতো 

2.     এই কোম্পানির কাছে যোগাযোগ করার মত যোগাযোগ ব্যবস্থা ভাল ছিল কারণ এর কাছেই ছিল রেলওয়ে স্টেশন 

3.     এবং জল নিকাশি ব্যবস্থা খুব ভাল ছিল জল সহজেই পাওয়া যে

এই সময় জামশেডজি এমন একটা কাজ করে দেখায় যেটা ভারতীয়দের জন্য গর্বের বিষয় ছিল তিনি সেই সময় Central India Spinning Weaving & Manufacturing নামের একটি কোম্পানি তৈরি করেনযেটা কোন একজন ভারতীয়র তৈরি । যেটা ভারতের প্রথম এমন একটি কোম্পানি ছিল স্টক এক্সচেঞ্জে যার শেয়ার কেনাবেচা হতো। এই কোম্পানি টাই পরবর্তী সময়ে Emprese মিল নামে পরিচিত হয় ।  শুরুর সময় এই কোম্পানির মোড বাজেট ছিল পাঁচ লক্ষ টাকা যেটার মধ্যে রতন ডাটা ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা ইনভেস্ট করে এই জন্যই জামশেদজি টাটাকে এই কোম্পানির ম্যানেজিং ডাইরেক্টর করা হয়। 

 

বিলটি তৈরি হওয়ার সাথে সাথে প্রচুর মানুষ রোজকারের সুযোগ পায়। এবং শীঘ্রই রতন ডাটা মানুষের কাছে এক মহান ব্যক্তিত্বের পরিচয় লাভ পাই ।  নিজের ব্যবসার শুরুর দিকে জামশেদজির এক বিরাট আর্থিক ঝটকা লাগে তার ব্যবসার শেয়ারদার “প্রেমচন্দ্র রায় মিত্রের” ধার মেটাবার জন্য নিজের ঘরবাড়ি জমি জায়গা সবকিছুই বিক্রয় করতে হয় তাকে।  এরপর ১৮৮৭ সালে স্বদেশী মিল কেনার জন্য তার জমানো সমস্ত টাকা সেখানে লেগে যায় যার ফলে তিনি ভয়ানক আর্থিক সংকটে পড়ে যান কিন্তু তবুও তিনি ভেঙে পড়েনি সবশেষে তিনি বহু সংকট থেকে ফিরে এসে বিখ্যাত এক নামে পরিণত হয় ভারতের ইতিহাসে । এই মানুষটি সম্পূর্ণ আলাদা ধরনের ব্যক্তি ছিলেন নিজে কারখানাতে কর্মরত লেবারদের জন্য তিনি আলাদা আলাদা সুবিধা চালু করতেন। সেই সব সুবিধাগুলি অন্যান্য দেশে বিভিন্ন কোম্পানিতে এখনো পর্যন্ত চালু নেই এই সময় শ্রমিকদের মিলে কাজ করার দক্ষতা ট্রেনিং দেওয়া হতো তিনি আট ঘন্টা কাজ করার নিয়ম প্রথা চালু করেছিলেন প্রতিটি শমিক যেখানে কাজ করবে সেখানে হাওয়া খাওয়ার ব্যবস্থা চালু করেছিলেন অর্থাৎ ফ্যানের ব্যবস্থা করেছিলেন যাতে শ্রমিকদের গরমে কোনো রকম কষ্ট না হয় এবং শ্রমিকদের জন্য পেনশন ব্যবস্থা চালু করেন শ্রমিকদের যদি কোন দুর্ঘটনা ঘটে এবং আর্থিক সংকট দেখা দেয় সেই সময় কোম্পানি সে সমস্ত শ্রমিকদের পাশে দাঁড়াতো মিলের শ্রমিকদের ছুটির ব্যবস্থা তিনি চালু করেছিলেন। শ্রমিকদের জন্য এত কিছু ভাবার কারণে তিনি প্রেক্ষাপট করেছেন যে যে সমস্ত শ্রমিকরা তার কারখানায় কাজ করে তারা সকলে মিলে এক পরিবার এবং তিনি তাদের পরিবারেরই অংশ মনে করত । 

 

জামশেদজি টাটার তিনটি বড় স্বপ্ন ছিল স্টিল বা লোহার ফ্যাক্টরি খোলা বিশ্ব বিখ্যাত অধ্যায়ন কেন্দ্র স্থাপন করে ভারতীয়দের এগিয়ে রাখা বা জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র অথবা হাইড্রোই ইলেকট্রনিক প্লান্ট তৈরি করা কিন্তু তার জীবিত থাকা অবস্থায় তার এই তিনটি স্বপ্নের মধ্যে একটি স্বপ্নেও পূরণ হয়নি তবে তার এই স্বপ্ন পূরণে রাস্তা তিনি করেই রেখেছিলেন জীবিত অবস্থায় তার স্বপ্নের মধ্যে আরও একটি ছিল যে তাজ হোটেল যা ১৯০৩ সালে চার কোটি এক লক্ষ টাকা খরচ করে তৈরি করা হয়েছিল। তবে এখন এই টাকাটার মূল্য কয়েকশো কোটি টাকা হোটেল কে তৈরি করার পিছনে অনেক বড় গল্প রয়েছে একবার জামশেদজি বড় হোটেলে গিয়েছিল সেখানে গিয়ে তিনি বর্ণবিদ্বেষের শিকার হন এবং তাকে সেই হোটেল থেকে বের করে দেয়া হয় সেই ভয়ানক অপমানের পর তিনি মনে মনে ভাবেন ভারতবর্ষের তিনি সবচেয়ে বড় হোটেল তৈরি করবেন তাই সে সময় মুম্বাই শহরের একমাত্র বিল্ডিং যেখানে বিদ্যুৎ ছিল আমেরিকান পাখা লাগানো ছিল জার্মান লিফ্ট ও ইংরেজ রাধুনীদের এখানে চাকরিতে রাখা হয়েছিল তারপর থেকে জামসেরজীর শরীর ধীরে ধীরে খারাপ হতে থাকে এবং ১৯০৪ সালে জার্মানিতে এই মহান ব্যক্তি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে। 

 

এরপরেই তার ছেলে দরাবজি টাটা তার পিতার স্বপ্ন পূরণ করার লক্ষ্যে সমস্ত স্বপ্নগুলো পূরণ করার জন্য ১৯১০ সালের মধ্যে তিনি টাটা স্টিল প্লান্ট তৈরি করে ফেলেন তখন থেকে এই স্টিল প্রোডাকশন শুরু হয়ে যায় এবং তার কিছুদিনের মধ্যেই প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়ে যায় তখন যুদ্ধের ট্যাংক তৈরি করার জন্য ইংরেজদের প্রচুর পরিমাণে লোহার যন্ত্রপাতির প্রয়োজন হয় তারা ট্র্যাক তৈরি করার জন্য রেলের পথ তৈরি করার জন্য ও হাতিয়ার তৈরি করার জন্য টাটা স্টিল ব্যবহার করেন এবং ধীরে ধীরে টাটা ভারতবর্ষের সবথেকে বড় স্টিল ফ্যাক্টরি তৈরি হয়ে যান এবং দোরাবজি টাটা ১৯৩৮ সাল পর্যন্ত কোম্পানির দায়িত্ব সামলাতে থাকে এরপর তার দূর সম্পর্কে এক ভাই জাহাঙ্গীর রতনজী দাদাভাই টাটা কোম্পানির দায়িত্বভার সামলাতে থাকে যাকে বর্তমানে আমরা JRD TATA নামেই জানি কিন্তু তিনি ফ্রান্সে বলা হয়েছিলেন সেই সময় সেখানকার একজন বড় পাইলট ছিলেন পরবর্তী সময়ে তিনি ভারতবর্ষে এসে টাটা এয়ারলাইন্স তৈরি করেন আর এটাই ছিল ভারতবর্ষের প্রথম এয়ারলাইন্স কোম্পানি পরবর্তী সময়ে এই কোম্পানির নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় ইন্ডিয়ান এয়ারলাইন্স । স্বাধীনতার আগেই টাটা কোম্পানির আয়তন বিশাল বড় হয়ে যায় কিন্তু ভারত স্বাধীনতা হওয়ার পর এমন কিছু ঘটনা ঘটে যেটা টাটা কোম্পানির জন্য বিপদ হয়ে দাঁড়ায় স্বাধীনতার পর জহরলাল নেহেরু ভারতবর্ষে বড় বড় কোম্পানি ও স্কুল কলেজগুলি রাষ্ট্রীয়করন করে নাই এর কারণ হলো সরকার তখন এই সমস্ত কোম্পানিগুলিকে নিয়ন্ত্রণ করবে টাটা এয়ারলাইন্স কেউ তখন রাষ্ট্রীয় করণ করা হয় এই ঘটনার পর JRD TATA ভেঙে পড়ে এবং তিনি তখন মালিক হওয়া সত্বেও কোম্পানি লিডারশিপে পরিণত হয় তিনিও কোম্পানির এক কর্মচারী হিসেবে কাজ করতে থাকে অন্যান্য শ্রমিকদের সাথে ।  এখন একসময় এসেছে যে অনেকে মনে করছে ইন্ডিয়ান এয়ারলাইন্স কে ভারত সরকার বিক্রি করে দিয়েছে। আসলে কখনোই ইন্ডিয়ান এয়ারলাইন্স ভারত সরকারের ছিলনা টাটা গোষ্ঠী এই কোম্পানিটি কে তৈরি করেছিল ভারত সরকার শুধুমাত্র এর রাষ্ট্রীয়করণ করেছিলেন । এয়ারলাইন্স ও স্টিল ফ্যাক্টরি বাদেও টাটা কোম্পানি প্রথম ভারতবর্ষে লোকোমোটিভ রেল ইঞ্জিন ও প্রস্তুত করার কোম্পানি তৈরি করে । 

 

১৯৪৫ সালে টাটা কোম্পানি টাটা কনসাল্টেসিভ সার্ভিস অর্থাৎ TCS তৈরি করেন যেটা ইলেকট্রনিক ডাটা প্রসেসিং হিসেবে কাজ করে এছাড়াও গোটা বিশ্বের মানুষের জন্য ক্যান্সার রিসার্চ এবং ট্রিটমেন্ট সেন্টার তৈরি করেন তারপর থেকে টাটা গোষ্ঠী নুনের ব্যবসা থেকে শুরু করে ইলেকট্রনিক্স গেজেট সমস্ত কিছুই তৈরি করতে থাকে যেগুলি মানুষের নিত্য প্রয়োজনীয় জীবনে বিশেষ অবদান রয়েছে। JRD TATA মাত্র ৫২ বছর টাটা কোম্পানির দায়িত্বে ছিলেন আর এর মধ্যে তিনি ৯০ টিরও অধিক কোম্পানি তৈরি করে ফেলেন এর আগে টাটা কোম্পানি নেইলকো নামক এক কোম্পানিকে ১১৬ বিলিয়ন ডলার খরচ করে কিনে নিয়েছিল এই কোম্পানিটার রেডিও তৈরি করত কিন্তু ধীরে ধীরে এই কোম্পানি ডুবতে শুরু করে তখন এই ঢুকতে থাকা কোম্পানির দায়িত্বে দেয়া হয় রতন টাটাকে ১৯৬২ সাল থেকে টাটা কোম্পানিতে তিনি শুধুমাত্র একজন লেবার হিসেবে কাজ করতেন কিন্তু 1971 সালে তাকে এই কোম্পানির দায়িত্ব দেওয়া হয় তখন তিনি রেডিও তৈরি করার পরিবর্তে স্যাটেলাইট কমিউনিকেট করার পরিষেবা চালু করেন। যার ফলে Nelco চাকা ঘুরে যায় মাত্র কিছুদিনের মধ্যে ১৯৭৫ সালে নেলকো শেয়ার ২% থেকে কুড়ি পার্সেন্টেজ বৃদ্ধি পাই কিন্তু কিন্তু এই সময় এই ভারতে ইমার্জেন্সি ঘোষিত করা হয় যার নীলকর পড় বিশাল প্রভাব পড়ে এবং এই কোম্পানিটি বন্ধ হয়ে যায় এরপর তার এত উন্নত তার চিন্তা ভাবনা দেখে Emperise মিলের দায়িত্ব রতন টা টাকে দেয়া হয় এবং রতন টাটা সেই ডুবন্ত মিলের লোকসানের হাত থেকে সেটাকে বাঁচিয়ে নেয় তা সত্ত্বেও এমার্জেন্সির কারণে সবকিছু একেবারে নষ্ট হয়ে যায় । কিন্তু এইটুকু সময়ের মধ্যে রতন টাটা তার যোগ্যতার প্রমাণ দিয়ে দেয় এর জন্য ১৯৯১ সালে সিনিয়র ম্যানেজমেন্ট এর তরফ থেকে রতন টাটাকে টাটা গ্রুপের চেয়ারম্যান বানানো হয় । 

 

রতন টাটা চেয়ারম্যান হওয়ার পর থেকে টাটা গ্রুপ ঝড়ের গতিতে বাড়তে থাকে ইংল্যান্ডের Tetly Tea নামক একটি চায়ের কোম্পানিকে তিনি ১২ বিলিয়ন ডলার দিয়ে ক্রয় করে নেয়, এবং ইংল্যান্ডের এক বড় স্টিল কোম্পানিকে তিনি ১১.৩ বিলিয়ন ডলার দিয়ে কিনে নেন ইউরোপের জাগুয়ার ল্যান্ড রোভার কোম্পানিকে তিনি ২.৩ ব্রিলিয়ান ডলার দিয়ে কিনে নেন এরপর তিনি সাধারণ মানুষের জন্য টাটা ন্যানো গাড়ি লঞ্চ করে। যেটাতে শুধুমাত্র একটি মোটরসাইকেলের দামে পেয়ে যাবেন ফোর হুইলার কার এবং নিজের পরিবার নিয়ে ভ্রমন করতে পারবেন খুবই সহজে। যা আপনাকে রোজ জল-বৃষ্টি থেকে রেহাই দেবী সেটার দাম ছিল শুরুতে ১ লক্ষ টাকা । কিন্তু মার্কেটিং স্ট্যাটাজি ঠিক না হওয়ার জন্য টাটা ন্যানো ভারতবর্ষে ফ্লপ হয়ে যায় বর্তমানে টাটা কোম্পানি ভারতবর্ষে তথা সারা বিশ্বে দেড়শ টাকারও বেশি কোম্পানির তৈরি করে নিজের সাম্রাজ্য বিস্তার করেছে । কিন্তু এত বড় কোম্পানি হওয়া সত্ত্বেও টাটা কোম্পানি বিশ্বে ধনিশীল কোম্পানির তালিকায় ৪২১ নাম্বারে রয়েছে তবে হয়তো আপনারা ভাববেন এত ধনী হওয়া সত্ত্বেও এত পিছনে রয়েছে কি করে এর কারণ হলো একটাই টাটা ইনকামের ৬৬ পার্সেন্ট টাটা ট্রাস্ট ফান্ডে ডোনেট করেন গরিব ও পিছিয়ে পড়া মানুষদের সহায়তা করার জন্য আজ এর জন্যই টাটা কোম্পানি একটু পিছিয়ে রয়েছে । ইয়াং জেনারেশন রা সকলের রতন টাটার ফলো করা ইনস্ট্রাকশন অনুযায়ী কাজ করে। এবং তারাও চাই যে ভবিষ্যতে যেন রতন ডাটার মত মন নিয়ে কেউ জন্মাতে পারে। এই ছিল টাটা কোম্পানির ইতিহাস যা আপনারা শুনলে অবাক হবেন ।

 

Prokash Durlov

আমার নাম প্রকাশ করলাম আমি একজন প্রফেশনাল ব্লগার | ব্লগিং করি এবং ব্লগিং থেকে যেটুকু অর্থ উপার্জন করি সেটুকু আমার সংসারের কাজকর | আমি ২০১৩ সাল থেকে ব্লগিং করছি ব্লগিং ক্যারিয়ারে অনেক ওঠানামা হয়েছে তবুও আমি ব্লক থেকে ছাড়িনি আজও পর্যন্ত ইন্টারনেটের মাধ্যমে সমস্ত ধরনের ইনফরমেশন দর্শকের সামনে তুলে ধরছি |

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন

GP Global