একটি অভিশপ্ত জঙ্গলের কাহিনী যেখানে একবার কেউ প্রবেশ করলে যে বেরোনোর কোন উপায় নেই এই জঙ্গলটা নিয়েই আজকের এই পানিতে আলোচনা করব |২৪ শে ফেব্রুয়ারি ১৯৭৮ ক্যালিফোর্নিয়ার কিউবা কান্ট্রি থেকে পাঁচ বন্ধুর গ্রুপ জ্যাক হাট, উইলিয়াম স্তেলিং, জ্যাক মোটুকরা, দেভ, এবং গ্যারি এক জঙ্গলে ঘুরতে যাই পিকনিক করবার জন্য। হিউমাশ ন্যাশনাল পাহাড় ফরেস্টে রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হয়ে যায় এরপর তদন্ত চালিয়ে কোন হদিস না মিললে তারপর জুন মাসের পর বরফ গলে গেলে চারজনের মৃতদেহ বিক্ষিপ্তভাবে জঙ্গলের খুঁজে পাওয়া যায় তবেদের মধ্যে গ্যারিকে কোনদিনই খুঁজে পাওয়া যায়নি।
ক্যালিফোর্নিয়ার উবার কাউন্টিফাইড এলাকার এই ঘটনা গোটা বিশ্বের কাছে আজও ভীষণ রহস্যময় এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৭ সালে একটি সিনেমা তৈরি করা হয়, সিনেমাটির নাম “The Ritual” এই রিচুয়াল সিনেমাটির ঘটনায় আজকের এই গল্পটি তোমাদের সঙ্গে শেয়ার করব।
The Ritual Movie Explain: গল্পটির প্রথমে দেখানো যায় একটি হোটেলে পাঁচ বন্ধু মিলে বসে হাসি ঠাট্টা গল্প করছে। যাদের নাম লুক, ডম, হাজ, রব, ফিল, তারা অনেকদিন পর একসাথে হয়েছে তাই বারে বসে প্ল্যানিং চলছে ট্রিপের তাদের মধ্যে সবাই যে যার মত জায়গার সাজেস্ট করছেন রব সুইডেনের পাহাড়ে, হ্যাকিং এর জন্য যেতে বললে এখানে চার বন্ধুর মধ্যে কেউ রাজি হন না যার কারণে আড্ডা আরো এগিয়ে চলে সেখানে গল্প গুজব ছেড়ে যখন তারা বাইরের দিকে যায় তখন লুক ও রব একটা ওয়াইনস অফ চাই সেখানে তারা দেখতে পায় ওয়াইন সপের মালিক বিধ্বস্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে পরিস্থিতি বোঝার আগেই কয়েকজন গুন্ডা ভেতর থেকে বেরিয়ে এসে তখন পরিস্থিতি দেখে বুঝতে পারে যে তাদের দোকান হাইজ্যাক হয়েছে দোকানে ডাকাত পড়েছে সুযোগ বুঝে ওই ডাকাত দল ববের কাছ থেকে তার ওয়ালেট ও ওয়েডিং রিং দাবি করেন রব টাকা দিতে রাজি নাহলে একজন আচমকা রবের মাথায় লোহার রড দিয়ে বাড়ি মেরে রব কে মেরে ফেলেন ।
তারপর আচমকা লুপ জেগে উঠলে এই ঘটনার যের কাটে ঐদিনের ঘটনায় এখনো পর্যন্ত লুপের কাছে দুঃস্বপ্নের মতো ঘর কাটে সব সময় লুপ মনে ভাবে বন্ধুকে বাঁচাতে গিয়ে যদি সে সাহস করে বেরিয়ে আসতো তাহলে হয়তো তার বন্ধুর জীবনটা বেজে যেত যার কারণে সব বন্ধুদের মধ্যে লুপ নিজেকে আরও বেশি দোষী মনে করে।
সব বন্ধুরা কয়েক মাস পর রবের স্মৃতির উদ্দেশ্যে নর্থ সুইডেনের কিংস প্র্যায়ালে ট্রাকিং করছে কারণ বব সেখানে আসতে চেয়েছিল সেখানে বন্ধুরা এক উঁচু স্থানে গিয়ে ববের উদ্দেশ্যে ববের একটা ফটো রেখে সেখানে ওয়াইন পান করে তখন বন্ধুদের মধ্যে হাত সবসময়ই রবকে বলেন ববের সাথে যে ঘটনাটি ঘটেছে তার জন্য রব দাই নয়। কিন্তু এই মনকে বোঝানো অতটাও সহজ নয়। রব সবসময় মনে মনে ভাবতো তার জন্য হয়তো তার বন্ধুর মৃত্যু হয়েছে। তারা ভাবেন আজকে রাতটা এখানেই বিশ্রাম নিয়ে কাল সকাল বেলা নিজেদের যাত্রা শুরু করবে এমনটাই ভেবেছিল কিন্তু সকালে উঠতেই প্রচন্ড বৃষ্টি কিন্তু কোনোভাবে সবকিছু গুছিয়ে বৃষ্টির পর ট্রাকিং শুরু হল কিন্তু কোনক্রমে কিছুটা যাওয়ার পর ডমের পায়ে মোচড় লাগাই তার চলতে বেশ অসুবিধা হচ্ছিল তাই হাজ ম্যাপ দেখে সিদ্ধান্ত নেয় তারা পাহাড়ের চড়া রাস্তায় না গিয়ে তার জঙ্গলে সমতল ভূমিতে তাদের ট্রেকিং কন্টিনিউ করবে ।
সেই মতে জঙ্গলের রাস্তায় গিয়ে তারা সকলেই চমকে ওঠে কারণ কিছুটা গিয়ে দেখে জঙ্গলের ভেতর একটা কাপড় একটা পসুর মৃতদেহ ঝুলছিল কেউ মাঝখান থেকে সেই পশুটাকে বিবস্ত ভাবে চিরে দুই ভাগ করে রেখেছে। উপর থেকে কয়েক ফুট নিচে পড়ে রয়েছে পশুটার দেহের ভিতরে অংশ। ওই পশুটির লাশ দেখে সকলে ভাবল এমন কাজ কোন ভাল্লুক অথবা হিংস্র পশুর সম্ভব নয়। তারা সকলে লক্ষ্য করে শরীর থেকে এখনো পশুটার টাটকা রক্ত অর্থাৎ পশুটাকে আজ রাতেই মারা হয়েছে।
তারা সেই ব্যাপারটা নিয়ে কোনরকম মাথা না ঘামিয়ে খানিকটা এগিয়ে চলল তারা যা ভয় পাচ্ছিল সেটা আবার হল আকাশে আবার মেঘ জমছিল কিছুক্ষণের মধ্যেই ভীষণ বৃষ্টি নামলো সাথে বিদ্যুতের ঝলকানি ও মেঘের গর্জন তারা সকলে সিদ্ধান্ত নিল এখানে তারা নিজেদের টাবু টানাবে কিন্তু লুপের তখন নজর যায় সামনের গাছগুলোর দিকে কাজগুলিতে অদ্ভুত সব চিহ্ন রয়েছে তখন একটু এগোতেই তারা সামনে দেখতে পেল একটা বাড়ি রয়েছে। তাই তাদের মন সংযোগ বেশিক্ষণ স্থির না করে তারা সকলেই সেই বাড়ির দিকে এগিয়ে গেল এবং দরজা ভেঙে তারা সকলে বাড়ির ভেতর প্রবেশ করলো যাক তারা ভাবল তাগু ট্যাংক থেকে ভালো একটা ভাঙ্গা বাড়িতে রাত কাটানো।
তখন বাড়িটিতে প্রবেশ করতেই যাবে এমন সময় লোকের হঠাৎ করে মনে হলো জঙ্গল থেকে এক কাঞ্চিত আওয়াজ তার খুব কাছ থেকে বেরিয়ে গেল তবে রহস্যটা শুধু ঘরের বাইরেও নয় বাড়ির ভেতরে ও রয়েছে।
এর কারণ উপর থেকে ঝুলছে লোহার গাছে আঁকা চিত্রগুলি জায়গাটা তাদের কারোরও ভালো বলে মনে হচ্ছে না আচমকাই চিলেকোটা থেকে সিলেট চিৎকার আছে তারা সকলে সেখানে গিয়ে দেখে খড় ও কাঠ দিয়ে তৈরি করে রাখা হয়েছে সেখানে মুন্ডু বিহীন এক অদ্ভুত মানুষের স্ট্রাকচার। এই পুতুলটি দুই হাতে ধরা রয়েছে ধারালো দুটো অস্ত্র, তবে পা দুটো দেখে মনে হচ্ছে পশুর দুটো অংশ। বাইরে রয়েছে অপার্থিব আওয়াজ আর ভেতরে রয়েছে অলীক এক মূর্তি তাই সকলেই ভয় খেতে থাকে মনে মনে। তখন হাত তাদেরকে সাহস যোগাতে বলে এটা জঙ্গলের আদি কোন দেবতার মূর্তি হতে পারে যা তারা পূজা করে এজন্যই এখানে রাখা হয়েছে। যেমনটা সাধারণত হয়ে থাকে। তাই তারা সবকিছু ভুলে মনে করেন এই বৃষ্টির মধ্যে বেশিক্ষণ জেগে থাকার প্রয়োজন নেই রাতটা তো এক পরেই কেটে যাবে। তাই তারা সিদ্ধান্ত নেয় যে সেখানেই ঘুমিয়ে পড়বে।
মাঝরাতে ভীষণ বৃষ্টি ও বিদ্যুতের ঝলকানি যেন কারোর অনুমতি ছাড়াই ভেতরে ঢুকে আসছে বারবার আচমকা একটা বিদ্যুতের আলো হঠাৎ করে যেন থেমে যায় লুপের ঘুম ভেঙ্গে বাইরের দিকে তাকাতেই দেখে এক তীব্র আলো দরজা খুলতেই সে সেদিনের ওয়াইন সপে পৌঁছে গিয়েছে তারপর একদমটা আওয়াজে লুপের জ্ঞান ফিরতেই দেখে তার বুকের ভেতর তিনটে ছিদ্র কি কারনে কিভাবে হল এর কোন জবাব তার কাছে নেই, তখন হঠাৎ করে ঘরের ভেতর থেকে হাতের চিৎকার শুনে ঘরের ভেতরে এসে দেখে ও একটা দুঃস্বপ্ন দেখে নিজের প্যান্টে প্রস্রাব করে ফেলেছে। একদম অদ্ভুত ভঙ্গিমায় বসে তার বউ এর নাম নিয়ে বকবক করছে, আর উপরে ফিল উলঙ্গ অবস্থায় ওই মূর্তির সামনে পূজার ভঙ্গিমায় বসে পূজা করছে। লুক হতভঙ্গ কাকে কি বলবে কিছুই বুঝতে পারছেনা সে। তবে এই ব্যাপারটা নিয়ে বেশ কেউ কোন কিছু ঘাটলনা সকলে নিজের চেতনা ফিরে বাড়ির থেকে বেরোতেই তাদের সামনে এমন কিছু ঘটলো যা দেখে তারা সকলেই চমকে গেল।
বাইরের সবকটা গাছেই সেই সাংকেতিক চিহ্নে ভরে উঠেছে, আজ ভেবেছিল সাউথ ইস্টের রাস্তা ধরেই জঙ্গল থেকে বাইরে বেরোবে কিন্তু ডম অন্য একটা রোড দেখিয়ে তাদেরকে সেদিকে যেতে বলে কারণ পথ নতুন সভ্যতার দিশারী অতএব তারা গভীর জঙ্গলের রাস্তা ধরে এগিয়ে চলল তাদের মন চাইছে রাতের ঘটনা নিয়ে মুখ খুলতে কিন্তু কারোর কাছে এর সঠিক Explauation নেই। জঙ্গলের গভীরতার সাথে যেন রহস্য সমান তালে বেড়ে চলেছে। এরই মধ্যে রাতে যে বাড়িতে তারা আশ্রয় নিয়েছিল তাদের সামনে তেমন একটা বাড়ি নজরে পড়ে তবে কারো সেখানে ঢোকার সাহস হয় না এদিকে বাইরে দমের পায়ের ব্যথা বেড়ে যাওয়ায় দম সেখানে বসে পরে। সেখানে হাচের এক মিনিট ও সময় নষ্ট করতে ভালো লাগছে না কিন্তু কি বা করা যায় কিন্তু লোক বাকিদের রেস্ট করতে বলে একা উপড়ে যায় রাস্তা খোঁজার জন্য কিন্তু সুবিধা কিছুই হলো না। জঙ্গলের এইদিকটা যেন আরো বেশি নিস্তব্ধ শুধু মাজের মধ্যে কাঠঠোকড়ার তো শুনতে পাওয়া যাচ্ছে কাট কাটযে। কিন্তু তখনই ওই জঙ্গলের ভেতর ্লুকর চোখ যায় এক বিশাল আকার দৈত্যের ওপর সে যেন বিকট আওয়াজ করে চলে গেল তবে জিনিসটা লুক বুঝতে পারল না। তারপরে লুক আর একটি মিনিটও সময় নষ্ট না করে ছুটে চলে গেল তার বন্ধুদের কাছে তখন বন্ধুরা তাদের কোন কথা বিশ্বাস না করতে চাইলে লুক তখন তার বুকের ভেতর ক্ষতস্থান ডেকে তাদের বলে এর কোন কারণ তোমাদের কাছে জানা আছে।
তখন দম রবের মৃত্যুর জন্য লুককে দোষারোপ করলে ব্যাপারটা হাতাহাতির জায়গায় চলে যায় এমন পরিস্থিতিতে হাচ সবাইকে বোঝাই এমন অবস্থায় আমাদের উচিত সকলকে পাশে রাখা তাই করা মাথা ঠান্ডা রেখে কাজ করতে হবে। তাই এমন পরিস্থিতিতে মাথা ঠান্ডা রেখে প্ল্যানিং করে আগে বেরোতে হবে। এমন করে অনেকটা এগিয়ে গিয়ে তারা লক্ষ্য করে জঙ্গলের ভেতর মাটির নিচে একটা পুরনো তাবু তারা লক্ষ্য করে সেই সঙ্গে বেশ কিছু সামগ্রী ও একটা পরিবারের ছবি সেই সঙ্গে ও তাদের বেশ কিছু ছোট বাচ্চাদের খেলনা সেখান থেকে উদ্ধার করে। ইতিমধ্যে সকলের মনে গভীর ভাবনা যে এই পরিবারটা হয়তো এখানে মারা গিয়েছে অথবা মিসিং হয়ে গিয়েছে। এর মধ্যেই নেমে এলো সন্ধ্যা।
তবু আজ এখানেই লাগানো হলো খাবার ও পানীয় ইতিমধ্যে লিমিটেড লুক তখন বলে এভাবেই যদি চলতে থাকে তবে আমাদের অনাহারেই মরতে হবে। হাচ তখন লুককে বাইরে নিয়ে এসে বলে দমের পায়ের অবস্থা ভালো নয় ফিলের শরীর টটিকছনা আমাদের মধ্যে কেবল তৈরি হাইকিং এর অল্প অভিজ্ঞতা আছে। তাই তোকে সকালে বেশ কিছু তরকারি জিনিসপত্র দিয়ে দেব জানিয়ে তুই সকালে আমাদের জন্য রাস্তা খুঁজে নিয়ে এখানে আসবি, আর আমি ততক্ষণ এই দুজনের সাথেই থাকব তখন লুক ভারী চিন্তার মধ্যে পড়ে গেল এবং তাবুতে গিয়ে বসলো হঠাৎ করে বাইরের দিক থেকে ভারী পায়ের আওয়াজ এ কারোর চলাফেরার শব্দ শোনা গেল জঙ্গলের ভেতর থেকে।
তাবুর চেন খুলে সাহস করে বেরিয়ে আসতেই লুক দেখল আবার সেই ওয়াইন শপের ভেতরের দৃশ্য সামনে দাঁড়িয়ে থাকা গুন্ডা গুলো রবের ওপর এটাক করতেই বড় গাছ গুলো নড়ে উঠলো আর এক ঝোটকায় তখন লুকের ঘুম ভেঙে গেল তখন দেখে ফিল ভারী কণ্ঠস্বর এ চিৎকার করছে আর একটা বিকট ছায়ার নাকি হাচকে তুলে নিয়ে গিয়েছে, তখন হঠাৎ করে জঙ্গলের ভিতর থেকে আপারথিব আওয়াজে হাচের মিত্যুর আর্তনাদ শোনা গেল আর তার পরক্ষণেই সব শান্ত হয়ে গেল।
সাঙ্গাত ফিরে তারা সকলে জঙ্গলের মধ্যে ছুটে চললেন হাচকে খুঁজতে কিন্তু অদ্ভুত ব্যাপার হল হাচ কোথাও নেই তাকে কোথাও খুঁজে পাওয়া গেল না দম তখন সবাইকে আবার তাগুদে ফিরে যেতে বলে কারণ সব দরকারী জিনিস সেখানেই রয়েছে যদি কোন ভাবে তারা রাস্তা ভুলে যায় তবে বিপদ আরও আসন্ন হয়ে যাবে। ডমের কথায় যুক্তি ছিল তাই তারা সকলে সিদ্ধান্ত নেয় সকাল হলেই হাচকে সবাই খুঁজতে যাবে অপেক্ষা ছিল শুধু সূর্যের আলো ফুটতে, ভোর হতেই তারা সকলে বেরিয়ে পড়ে হাচকে খুঁজতে কিছু দূর গিয়ে তারা হঠাৎ করে একটা গাছের মধ্যে দেখতে পাই হাচের মৃতদেহ ঝুলছে যেভাবে ওই পশুটার মৃতদেহ তারা ঝুলতে দেখেছিল প্রথমে। কোন অভ্যাসিব শক্তি যেন তার বুক থেকে কোমর পর্যন্ত চিরে সমস্ত কিছু বার করে দিয়েছে, বন্ধুর এই মর্মান্তিক মৃত্যু দেখে তারা সকলেই স্তব্ধ জেতারা হাচের বউ-বাচ্চাকে কি জবাব দেবে অবশেষে দমের কথায় বন্ধুকে গাছ থেকে নামিয়ে কোনমতে কবর দিয়ে তিনজনে মিলে এগিয়ে চলল এই জঙ্গল থেকে বাঁচার আশায়।
অবশেষে তারা বুঝতে পারে ওই জঙ্গলের ভেতর বাড়িতে তারা রাত কাটিয়েছিল সেখানে তারা যে সমস্ত দুঃস্বপ্ন দেখেছিল তা একে একে সত্যি হতে চলেছে। দম বেশি কথা বাড়াইনা হাচ যে পথে তাদের যাওয়ার কথা বলেছিল সে পথে যাবার সিদ্ধান্ত নেই কয়েক ঘন্টা যাওয়ার পর পথে তারা তৃষ্ণার্ত অবস্থায় এক জলের সন্ধান পেলে সেই জল পান করার পর তারা একটু স্বস্তি পান। দম খেয়াল করে ভেজে মাটির ওপর অসংখ্য গোল গোল পায়ের ছাপ রয়েছে যা ক্রমশ জঙ্গলের মধ্যে চলে গিয়েছে তবে পথ বরাবর যতগুলি ভাঙা গাছ রয়েছে সবগুলি ভাঙতে ভাঙতে গিয়েছে। তাই তারা এগিয়ে গেল সাউথ ইস্টের দিকে, তবে এইভাবে আর কতক্ষণ যাওয়া যায় শরীর আর সাথ দিচ্ছেনা লুপ তখন সোজা উপরের দিকে ছুটে আসলে তার নজরে পড়ে দূরে থাকা বস্তির মশালের ওপর, লুক তখন নিচে বলতে আসবে এমন সময় হঠাৎ করে আচমকা ফিলকে কেউ দূরে তুলে নিয়ে যায় তখনই শোনা যায় গগন ফাটা এক অপার্থিব আওয়াজ যা শুনে পুরো জঙ্গলটা একেবারে কেঁপে উঠলো আবার তারপর সব আগের মত। লুব ছুটে পালাতে গেলে মাথায় আঘাত এসে আবার নতুন করে রবের সেই ওয়াইন শপের দৃশ্য দেখতে পাই এরপরে হুঁশ ফিরলেই সামনের ওপর দেখে পড়ে আছে ফিলের রক্তমাখা টচ তখনও কিন্তু সেই অজানা শক্তির উপস্থিতি সেই জঙ্গলে টের পাওয়া যাচ্ছে। তখন দম আর লুব জঙ্গলে এক গাছের গুড়ির পিছনে লুকিয়ে পড়ে , তাই তখন তারা সিদ্ধান্ত নেয় যেমন করে এই জঙ্গল অতিক্রম করে তারা ওই বসতির কাছে পৌঁছাবেই তাদের আর দেরি করা যাবে না দুজনে একে অপরকে ধরে দৌড়াতে শুরু করে কোনক্রমে জঙ্গল পার করে বস্তির মধ্যে পৌঁছাতেই লক্ষ্য করে, পাশের গাছটাতে ফিলের বডি ঝুলে রয়েছে প্রচন্ড ভয়ে সাহায্যের জন্য চিৎকার করে সামনে থাকা ঘরের দরজা ভেঙে ঢুকতেই দেখে সামনে কিছু একটা চলছে না দেখে মনে হচ্ছে যেন সেখানে কোন এক রিচুয়াল করা হচ্ছে। আলখোল্লা পোশাক পড়ে কেউ বসে রয়েছে তখনই এক ভারী লাঠির আঘাতে লুক জ্ঞানহীন হয়ে যায়। কিছুক্ষণ পর জ্ঞান ফিরেছে তা জানেন না শুধু দেখল তাদের দুজনকে দরির সাহায্যে বাধা রয়েছে আর বাইরে থেকে আসছে এক অদ্ভুত আওয়াজ কোন মন্ত্রনা নরকদারের চিৎকার তা বোঝা বড় মুশকিল হয়ে যাচ্ছে লোক তখন কাঠের ফুপু দিয়ে বাইরে দেখার চেষ্টা করল দেখল একজন লোক যেন কাঠ দিয়ে কিছু একটা বানানোর চেষ্টা করছেত, লুক সামনের টেবিলে থাকা কাছের বোতলের সাহায্যে নিয়ে নিজেকে মুক্ত করতে চাইলে আওয়াজ শুনে দুইজন বৃদ্ধ ভেতরে আছে যার মধ্যে একজন ছিল মহিলা। তখন লুককে ওই মহিলা দেখান তার বুকের ভেতর সেই একই ক্ষত রয়েছে যা ল লুককের বুকের ভেতর হয়েছিল ওই বাড়ির ভেতর প্রবেশ করে। দম তখন ঐ বৃদ্ধ মহিলার কাছে জল চাইলে তিনি তার পাশে থাকা ওই বৃদ্ধকে বলে ডমকে পাশের ঘরে নিয়ে যেতে এবং তারা ডমকে পাশের ঘরে নিয়ে গিয়ে নিশংসভাবে মারতে থাকে।
কিছুক্ষণ পর এক ইয়াং মেয়ে এসে লুককে বলল তারা এখানে বলি দেওয়ার ব্যবস্থা করছে কথাটা শুনেই লুক জ্ঞানহীন হয়ে যায় তার কিছুক্ষণ পর দমতে মেরে বিধ্বংস করে লুকের সামনে রেখে দিয়ে যাই কিছুক্ষণ পরেই দম বলল সেই দিন রাতে একমাত্র আমার দুঃস্বপ্নের কথাই তোমাদের কাউকে বলা হয়নি, এর কারণ আমি তখন বিশ্বাস করিনি সেই স্বপ্নটা সত্যি হতে চলেছে। সেদিন আমি স্বপ্নে দেখেছিলাম জঙ্গলের কিছু লোক তাদের দেবতার উদ্দেশ্যে আমাকে বলি দিচ্ছে। আর আমার ঠিক সামনে দাঁড়িয়ে রয়েছে আমার বউ মেরি। লুক আমি আর কিছুক্ষণের মধ্যেই মরতে চলেছি। আমাকে বাঁচানো সম্ভব হবেনা,কিন্তু আমি চাই তুই এই পুরো এলাকাটিকে জ্বালিয়ে শহরে ফিরবি।
লুক তখন অনেক চেষ্টা করে দমের মনে সাহস জোগাতে কিন্তু দম যা বলেছিল সেটাই সত্য হয় তার কিছুক্ষণের মধ্যেই কয়েকজন লোক তাকে কাঠের সঙ্গে ক্রুসবিদ্ধ করে ঝুলিয়ে দিল। দম দেখে সামনের গাছে ঝুলছে একাধিক মৃতদেহ অর্থাৎ এটাই তার নিয়তি গহীন জঙ্গলের বুক চিরে নেমে আসে অন্ধকার মনে হচ্ছিল যেন সবই সেই শয়তানের আগমনের প্রস্তুতি। হঠাৎ করে জঙ্গলের ভেতর থেকে নেমে আসলো অপার্থিব গর্জনের অনুভূতি তখন সবাই একপ্রকার ভয়ে কাঁপছে কারো সাহস নেই মাথা তুলে দেখায় সবাই মাথা নিচু করে সেখানে বসে পড়ল, দম দেখছে জঙ্গলের বড় বড় গাছগুলো একেক করে ভেঙে পড়ছে তখনই জঙ্গল থেকে বেরিয়ে আসে দমের বউ মেরি দম রিতিমত আবাক মেরি তার কাছে আসতেই তার চোখের মনি দুটো একেবারে সাদা হয়ে আসে আর তখনই দম দেখতে পাই তার মাথা যে ধরে রয়েছে সে আসলে মেরি নয় এক অদ্ভুত জীব। লম্বা হাত আর মুখ ঠিকভাবে দেখা যাচ্ছে না শুধু দেখা যাচ্ছে অন্ধকার কঠোর এর মধ্যে জ্বলছে আলোর দুটো বিন্দু রেখা মাত্র। আর এই জিভটি তখন দম সোজা তুলে নিয়ে গেল গাছের ওপর ডালের ওপর ঝুলিয়ে দিল বুক চিরে সমস্ত কিছু বাইরে বার করে দিল আর এভাবেই মৃত্যু হল দমের। আর কাঠের ঘরের ভেতর থেকে এই ভয়ানক দৃশ্য দেখছে লুক কিন্তু সে কি করবে কিছুই ভেবে উঠতে পারছে না এইভাবে বসে থাকলে তো আর হবে না তখন তার হাতের বুড়ো আঙুল ভেঙে লুক বেরোতেই যাবে তখন সামনে এক যুবতী মহিলা প্রবেশ করল। লুক তখন তাকে জিজ্ঞেস করল দমের দেহ কি গাছ থেকে নামানো হবে না তখন ওই মেয়েটি হেসে তাকে জানাই এটা একটা প্রাচীন দেবতা বা ইউটেনের উদ্দেশ্যে একটা ছোট্ট বলি মাত্র (নর্থ মাইথোলজির ইউট্রন নকির অবগত সন্তানদের মধ্যে একজন প্রাচীন কাল থেকে তিনি এই জঙ্গলেরই দেবতা) আসলে প্রাচীন গ্রন্থের মতে এই নিউট্রনদের সৃষ্টি হয়েছিল ভগবান ও মানুষদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য । যে সমস্ত মানুষেরা জঙ্গলের নিয়ম ভঙ্গ করবে এই দেবতারা তাদেরকে মৃত্যুর দেশে পাঠিয়ে দেবে। সুইডেনের জঙ্গলের এক প্রজাতি এই দেবতাকে এখনো পর্যন্ত পুজো করে, এবং এই দেবতা নাকি এতটাই শ্রদ্ধেয় তাদের কাছে তাদের নাম মুখে আনাটাও পাপ। ইউটেন তাদের সমস্ত দুঃখ যন্ত্রণা ও মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা করে এবং তাদের বেদনা পীড়া থেকে দূরে রাখে প্রতিবছর জঙ্গলে ঘুরতে আসা গ্রুপের মধ্যে থেকে একজনকে বেছে নেয় ইউট্রন যাতে সে তাকে পুজো করে, আসলে নিউটন একজনকে বেছে নেয় যার মধ্যে দুঃখ বেদনা যন্ত্রনা বেশি থাকে নিউটন তাকেই পছন্দ করে।
যেমন এই ক্ষেত্রে রবের মৃত্যু জন্য লুক নিজেকে বেশি দোষারোপ করতো ফলে তার মনের মধ্যে ক্রমাগত দন্ড চলতেই থাকতো মেয়েটি তাকে এটাও বলে, তুমি যদি নতনা হউ ইউটন কে পূজো না করো তাহলে ইউটন তোমাকেও মেরে ফেলবে। একথা বলে মহিলাটি চলে যাওয়ার পর লুপ শুনতে পাই হঠাৎ করে গয়াঙ্গানীর শব্দ মশাল হাতে পাশের ঘরে প্রবেশ করে দেখে বিক্ষিপ্তভাবে পড়ে রয়েছে একাধিক বিক্ষিপ্ত লাশ তারা না মরেও এক অদ্ভুত অবস্থায় বেঁচে রয়েছে তখন লুক বুঝতে পারে এদের কাছে অমরত্বের আসল অর্থটা কি, লুক তাদের এই অবস্থা দেখে প্রত্যেকের আত্মার শান্তি কামনা করে প্রত্যেকটা শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয় । আর বেরোনোর সময় সেই বৃদ্ধ মহিলারে তার শরীরে আগুন লাগিয়ে সারা ঘরের ভেতর আগুন ধরিয়ে বাড়িটিকে পুড়িয়ে ছাই করে দেয়।
দাউ দাউ করে জ্বলছে জঙ্গলের অভিশপ্ত বসতির অংশ জীবন তো লাশ গুলির আর্তনাদ ঝরিয়ে বলল অদুর সীমানায় তখনই জঙ্গল থেকে হুংকার দিয়ে বেরিয়ে আসে ইউডেন তাকে দেখামাত্র সকলে মাথা নিচু করে বসে পড়ে আসলে এই সমস্ত জীবন্ত লাশ জ্বালিয়ে দেওয়ার কারণেই ইউডেন ক্ষিপ্ত হয়ে গেছে। তাই একে একে নৃশংস হবে সকলকে মারতে শুরু করে, লুক ততক্ষণে গুদামঘর থেকে কাঠারি ও বন্দুক বার করে সমস্ত বাধা পার করে জলন্ত বসতি থেকে বেরিয়ে আসলে প্রথম বারের মত লুক ইউট্রেনের আসল রূপ স্বচক্ষে দেখে অবাক হয়ে যায় ইউট্রে্ন বৃদ্ধাকে শিং বৃদ্ধ করে তুলে নিয়ে যায় লুক যখন ভয়াবহ স্বপ্নের মত সেই দৃশ্যকে স্বচক্ষে দেখে আর তার বন্দুকটা নিয়ে ইউট্রেনের টিকে ফায়ার করলেও তার কিছুই হয়না ঠিক তার পরক্ষণেই ইউট্রেন গর্জন করে লুককে তারা করে হঠাৎ করে ইউট্রেনের ধাক্কায় লুক পড়ে যায় তখন রুদ্ররূপ ধারণ করে ইউট্রেন কিন্তু লুক জানতো তার সামনে মাথা নত করলে সহজে তাকে কিছু করবে না ইউট্রেন।
আর তখনই তার পাশে পড়ে থাকা কাটারির ওপর নজর যায় লুকের সুযোগ বুঝতেই নিমেশের মধ্যে কাটারির দিয়ে তার মুখে প্রচন্ড আঘাত করে দৌড়ে পালিয়ে যাই লুক শরীরে যত শক্তি আছে প্রাণপণে দৌড়াতে লাগলো লুক একসময় দৌড়াতে দৌড়াতে জঙ্গলের বাইরে চলে আসে আর অদ্ভুত ব্যাপার হলো এটাই যে ইউট্রেন ঠিক জঙ্গলের সীমানায় এসে দাঁড়িয়ে যায় সে কিছুতেই আর জঙ্গল পাড়িয়ে এপারে আসছে না, অর্থাৎ ইউট্রেনে আধিপত্য এবং অভিশাপ এক নির্দিষ্ট জায়গায় সীমাবদ্ধ লুক তখন তার দিকে তাকিয়ে সমস্ত দুঃখ কষ্টের বাধা বিঘ্ন পাড়িয়ে দুই বন্ধু হারাবার কষ্ট যন্ত্রণা দিয়ে গালিগালাজ করতে লাগলো সে বুঝতে পারল তার ক্ষমতা ইতিমধ্যে এখানেই শেষ এবং তার প্রাণ বেঁচে গেল।